স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১১ জুন।। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে আজ মহাকরণের কনফারেন্স হলে কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের এক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের কোভিড ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে খোজ নেন।
আলোচনায় কোভিড সানাক্তকরণে যথা সময়ে পরীক্ষা না করা ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণে বিলম্বের জন্য কোভিড সংক্রমণে মৃত্যুর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। যারা সঠিক সময়ে চিকিৎসার সুযোগ নিয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার খুবই কম। অন্যদিকে উপসর্গ থাকার পরেও যারা চিকিৎসা গ্রহণে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করছেন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার অনেকটা সময় পরে চিকিৎসার সুযোগ নিচ্ছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি।
আলোচনায় স্বাভাবিক সময়ে কোমবিডিটি সহ নানা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যুর হার এবং করোনা পরিস্থিতিতে কোমবিডিটি ও করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর হারের আনুপাতিক হিসেব বিশ্লেষণ করে সংখ্যায় কতটা ফারাক রয়েছে তা মূল্যায়ণ করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর উপরে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শুধুমাত্র করোনা সংক্রমিতদেরই নয়, টেলিফোনে বা রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে শিক্ষক-শিক্ষিকা, মেডিক্যাল ইনটার্ন, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক এবং বিভিন্ন নির্বাচিত সংস্থাগুলির মাধ্যমে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন। যাদের কাজ হবে প্রতি বাড়িতে ফোন করে কারোর করোনা উপসর্গ আছে কিনা, যদি থাকে তাহলে তাদের কি করণীয় সে সম্পর্কে সহায়তা করা।
প্রতি জেলা ও মহকুমায় ওয়ার রুমের মাধ্যমে একটি সেন্ট্রালাইজড নম্বর ঘোষণা করে সকলের সাথে যোগযোগ করার পরামর্শ দেন। যাতে করে উপসর্গ থাকা সত্বেও কোন ব্যক্তি যদি গাফিলতি বা অসচেতনতার কারণে চিকিৎসার সুযোগ থেকে দূরে থাকেন তাদেরকে সঠিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা যাবে।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ১৮ বছরের উর্দ্ধে টিকাকরণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন। কোভিড চিকিৎসার সমস্ত ধরণের মেডিসিন হাসপাতালে প্রস্তুত রাখা ও জেনেরিক মেডিসিনের ব্যবহার বাড়ানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী প্রেসক্রিপশান অডিট এর বিষয়টির উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। বৈঠকে আয়ুষ্মান ভারত কার্ড, অনলাইন ই-পরিষেবা, অনলাইন রেজিস্ট্রেশান ও হাসপাতালের অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কোভিড পরিষেবা ছাড়াও সাধারণ স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো উন্নয়ণ ও আধুনিকীকরণের উপর জোর দেন। বিভিন্ন জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা সহ যেসব স্থানে ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে সচেতনতার অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে সেখানে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণের উপর বৈঠকে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব কুমার অলক, সচিব কিরণ গিত্যে, মুখ্যমন্ত্রীর সচিব পি কে গোয়েল, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা সিদ্ধার্থ সিং জয়সবাল, জি বি রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক, আই জি এম রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিধায়ক ডা. দিলীপ দাস, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও আই এল এস’র প্রতিনিধি এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকগণ।