ত্রিপুরার অর্থনীতির ভিত্তি সমৃদ্ধ হবে আত্মনির্ভর প্রকল্পের সুযোগ নিলে, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

নতুন প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ জুন।। আত্মনির্ভর প্রকল্পের সুযোগ নিতে পারলে সমৃদ্ধ হবে ত্রিপুরার অর্থনীতির ভিত্তি। জোর গলায় এই দাবি করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তাঁর আহ্বান, করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় লকডাউনজনিত পরিস্থিতিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি (এম এস এম ই) শিল্পোদ্যোগী ও ব্যবসায়ীদের স্বনির্ভর ত্রিপুরা তথা স্বনির্ভর ভারত গড়ার জন্য উদ্যোগী হোন৷ আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ১ নং হলে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তর আয়োজিত আত্মনির্ভর ভারত অভিযান প্রকল্পের অন্তর্গত ক্ষুদ্র, লঘু ও মধ্যম উদ্যোগ এবং ব্যবসার জন্য ঋণদান শিবিরের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ এদিন তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের সুুফল আমরা নিতে পারলে রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুুযোগ যেমন সৃষ্টি হবে তেমনি সমৃদ্ধ হবে ত্রিপুরার অর্থনীতির ভিত্তি৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরার শিল্প উদ্যোগীদের ব্যবসায় উন্নতির জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা প্রয়োজন৷ এক্ষেত্রে ব্যবসার টার্নওভার বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাজ করার উপর গুরুত্ব আরোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী গ্রাম স্বরাজ এবং ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নতি চেয়েছিলেন৷ এর বাস্তবায়নে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্রাম স্বরাজের লক্ষ্যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির হাতে ৮০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করার সংস্থান রেখেছেন৷ একই সঙ্গে ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পগুলির (এম এস এম ই) পরিচিতি পূর্বের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে রাজ্যে৷ যা আগে শুধুমাত্র বড় শহরগুলির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ত্রিপুরায় শিল্প উন্নয়নে উৎসাহিত করতে শিল্প উদ্যোগীদের ইনসেনটিভ দেওয়া হয়৷ এক্ষেত্রে তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, ২০১৭-১৮ সালে কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথভাবে শিল্পের প্রসারের জন্য ৮ কোটি টাকা ইনসেনটিভ দিয়েছিলো৷ বর্তমান রাজ্য সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে ২০১৮-১৯ সালে ১৮ কোটি টাকার ইনসেনটিভ দিয়েছে৷ সেই সঙ্গে ২০১৯-২০ সালে মোট ২৯.২৩ কোটি টাকার ইনসেনটিভ শিল্প উন্নয়নের জন্য দেওয়া হয়েছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা সহ ভারতের অর্থনীতিকে মজবুত করার জন্য যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তা সফল হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণজনিত পরিস্থিতিতেই শিল্প ও শ্রমক্ষেত্রে সংস্কার করা হয়েছে এমনটি নয়৷ প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার ফলে করোনা উদ্ভত পরিস্থিতির পূর্বেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগ টানতে কর্পোরেট ট্যাক্স কমিয়ে দেওয়া হয়েছিলো যার ফল স্বরূপ বিদেশি শিল্পপতিরা দেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন৷ এদিন তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে এম এস এম ই এবং ব্যবসা ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ কোটি টাকার বন্ধকহীন ঋণের ব্যবস্থা রয়েছে৷ এছাড়াও ব্যাঙ্কে বকেয়া ঋণের উপরও ২০ শতাংশ ঋণ পাওয়ার সংস্থান রয়েছে এই প্রকল্পে৷ এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি যাতে ঋণ গ্যারান্টির জন্য এম এস এম ই শিল্পোদ্যোগী বা ব্যবসায়ীদের বাধ্য না করেন তারজন্য তিনি ব্যাঙ্কগুলির পরিচালন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ তিনি বলেন, বোধজংনগর শিল্প অঞ্চল তৈরি হওয়ার পর থেকে ১১৮টি শিল্প ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে৷ এরমধ্যে গত দুই বছরে ৪৯টি শিল্প ইউনিট গড়ে উঠেছে৷ এই শিল্পোদ্যোগী এবং ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে প্রায় ৮২ হাজার লোকের রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছে৷ তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য নিয়মাবলীর সরলীকরণ করা হয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের জন্য ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের সুুবিধার্থে ত্রিপুরা সরকার ১ লক্ষ ছোট দোকানীদের চিহ্ণিত করেছে৷ দোকান ভিটির মালিক এবং ব্যবসায়ী সকলের কথা বিবেচনা করে এই ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এর ফলে বিমা সহ ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুুবিধা পাবে ছোট ব্যবসায়ীগণ৷

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?