স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৬ মে।। আগরতলা পুর নিগমের সমস্ত ওয়ার্ডে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে চলেছে যা জনস্বাস্থা ও নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক এবং উপযুক্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে জনহানির ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই তাৎক্ষণিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক র্যাভেল হেমেন্দ্র কুমার আজ এক আদেশে সমস্ত পুর নিগম এলাকায় ১৪৪ ধারায় করোনা কার্ফু জারি করেছেন। এই আদেশে করোনা কার্ফু আগামীকাল ১৭ মে, ২০২১ সকাল ৫টা থেকে ২৬ মে, ২০২১ সকাল ৫টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা নিম্নরূপ:
আগরতলা পুর নিগম এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকগণ কার্ফু চলাকালীন সময়ে বাড়ির ভিতরেই থাকবেন। আপৎকালীন পরিস্থিতি ছাড়া কোনও ব্যক্তি পায়ে হেঁটে বা যানবাহনে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে পারবে না।
সমস্ত সিনেমা হল, শপিং মল, জিমন্যাসিয়াম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও স্ট্যাডিয়াম, সুইমিং পুল, বিনোদনমূলক পার্ক, থিয়েটার, বার এবং অডিটোরিয়াম, অ্যাসেম্বলি হল ও সে জাতীয় স্থান বন্ধ থাকবে।
সমস্ত সামাজিক / রাজনৈতিক / খেলাধূলা / বিনোদনমূলক / শিক্ষামূলক / সাংস্কৃতিক / ধর্মীয় ও অন্যান্য জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সমস্ত ধর্মীয় স্থান জনসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে এ সমস্ত স্থানে নিযুক্ত কর্মকর্তারা বাইরের কোনও লোকের সহায়তা ছাড়া দৈনন্দিন কর্তব্য চালিয়ে যাবেন। ৩ মে, ২০২১ জারি করা করোনা কার্ফু ১৭ মে, ২০২১-এর সকাল ৫টা পর্যন্ত কার্যকরথাকবে। লকডাউন বা কার্ফু চলাকালীন সময়ে নিম্নলিখিত কার্যকলাপ জারি থাকবে:
আইন শৃঙ্খলা, পুর পরিষেবা, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা ও জেলা প্রশাসনের কাজে যুক্ত ব্যক্তি, পুলিশ / মিলিটারি / সি এ পি এফ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ পরিষেবা, অগ্নি, পানীয় জল, সংবাদমাধ্যম, গেইল, আদালত, সমাজকল্যাণ দপ্তরের হোম, খাদ্য ও জনসংভরণ, বন ও অন্যান্য কোভিড-১৯ সংক্রান্ত
সরকারি কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা কার্ফুর আওতার বাইরে থাকবেন। ২) খাদ্যদ্রব্য, গ্রোসারি সামগ্রী, ফল, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছ/ মাংস ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদিবিক্রয়ের দোকান সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে সমস্ত শপিং মল ও মার্কেট কমপ্লেক্স বন্ধ থাকবে। মাল পরিবহণ, পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য, পণা বহনকারী খালি যানবাহন, পণ্য লোডিং, আনলোডিং-এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
একমাত্র আপৎকালীন সময়ে বাস / হালকা যান / অটো / ই-রিক্সা এবং ব্যক্তিগত যান চলাচল করতে পারবে। বাস, ট্রেন ও প্লেন থেকে নামার পর যাত্রীরা যার যার গম্ভব্যস্থলে যেতে পারবে।
আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা চালু থাকবে তবে রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে জরুরি পরিষেবা / স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি কারণ ছাড়া যানবাহন আগরতলা পুর নিগম এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
হাসপাতাল, পশু হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান, এ সংক্রান্ত সরকারি ও বেসরকারি উৎপাদন ও বন্টন জাতীয় কার্যকলাপ যেমন ডিসপেনসারি, কেমিস্ট, ফার্মেসি (জনঔষধি কেন্দ্র সহ), মেডিক্যাল সরঞ্জামের দোকান, ল্যাবরেটোরি, ফার্মাসিউটিক্যাল গবেষণার ল্যাব, ক্লিনিক, নার্সিং হোম, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদি চালু থাকবে। স্বাস্থ্যকর্মী, নার্স, প্যারা মেডিক্যাল কর্মী ও অন্যান্য হাসপাতাল সাপোর্ট স্টাফের পরিবহণে নিযুক্ত যানবাহন চলবে।
টেলি পরিষেবা, ইন্টারনেট পরিষেবা, সম্প্রচার ও ক্যাবল পরিষেবা, আই টি ও আই টি নির্ভর পরিষেবা চলবে। খাদ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল ও মেডিক্যাল সরঞ্জাম সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় পণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে সরবরাহ চালু থাকবে।
হোটেল খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্টগুলি একমাত্র বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য এবং হোম ডেলিভারির জন্য খোলা থাকবে। ১০) পেট্রোল পাম্প, এল পি জি সি এন জি, পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস-এর খুচরো বিক্রি ও স্টোরেজ দোকান খোলা থাকবে।
বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী পরিষেবা। কোভিড-১৯ নিয়ম মেনে জেলা প্রশাসনের আগাম অনুমোদন নিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ জন নিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত বিবাহ অনুষ্ঠান করা যাবে।
প্রমাণপত্র দেখিয়ে যোগ্য ব্যক্তিরা ভ্যাকসিন নিতে যেতে পারবেন। ল ২৪ ঘণ্টা চলমান শিল্প / কোম্পানী বিভিন্ন শিফটে কাজ করতে পারবে। এ সমস্ত শিল্প /
প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা যার যার প্রতিষ্ঠানের দেওয়া পরিচয়পত্র নিয়ে চলাচল করতে পারবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং উৎপাদনকারী শিল্পের কাজকর্মে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।
দাহকার্য / অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে ২০ জনের বেশি লোকের জমায়েত হতে পারবে না। ১৬) নির্মাণ কাজ ও প্রকল্পের কাজে নিষেধাজ্ঞা নেই। ব্যাঙ্ক, এ টি এম, আর বি আই এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে।ন্যাশনাল ইনফর্মেটিক্স সেন্টার, কাস্টম ও স্থলবন্দরের কাজ চালু থাকবে।
বিমানবন্দর / রেলওয়ে ও কার্গো পরিষেবা চালু থাকবে।ডাক ও ক্যুরিয়ার পরিষেবা চালু থাকবে।
বীজ, সার, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রয় ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে মেরামতের কাজে নিষেধাজ্ঞা নেই।
প্লাম্বার, ইলেকট্রিশিয়ান, মেকানিক ও অন্যান্য গৃহস্থালীর সামগ্রী মেরামতের কাজ চালু থাকবে।নিত্যপ্রয়োজনীয় / আপৎকালীন পরিষেবা প্রদানকারী সমস্ত কার্যালয় খোলা থাকবে। বাকি অফিসগুলি সামান্য কর্মচারী দিয়ে রোস্টার সিস্টেমে চলবে।
এ এম সি এলাকায় বসবাসকারী কিন্তু বাইরে কর্মরত ব্যক্তি এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবায় নিযুক্ত ব্যক্তি তার কাজে যেতে পারবেন। কিন্তু এ এম সি এলাকায় বসবাসকারী কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবার কাজে এ এম সি-র বাইরে কর্মরত ব্যক্তিরা রোস্টার অনুযায়ী কাজে
যেতে পারবেন। পশ্চিম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আই পি সি-র ১৮৮ ধারায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।