অনলাইন ডেস্ক, ২৬ এপ্রিল।। করোনা কেড়ে নিল পণ্ডিত রাজন মিশ্রকে। ভেঙে গেল সমকালীন ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের দিকফলক হিসেবে খ্যাত রাজন-সজন জুটি। এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে সময় মতো ভেন্টিলেটর না পাওয়াকেই। ভেন্টিলেটরের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বরাবরও আবেদন করা হয়।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, কভিডে আক্রান্ত রাজনকে শুক্রবার ভর্তি করা হয় দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স হাসপাতালে। শনিবার রাত থেকে তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। বিকল হয়ে পড়ে কিডনিও।
রবিবার সকালে ডায়ালিসিস করার সময় কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হওয়ায় খোঁজ পড়ে ভেন্টিলেটরের। কিন্তু ওই হাসপাতালে একটিও ভেন্টিলেটর খালি ছিল না।
রাজনের পরিজন ভেন্টিলেটর জোগাড়ের মরিয়া চেষ্টা চালান। বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে তারা ভেন্টিলেটর খোঁজ শুরু করেন। টুইট করা হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সচিবালয়কে ট্যাগ করেও। এরপর বিনা ভেন্টিলেটরেই সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় প্রয়াত হন রাজন।
রাজনের ঘনিষ্ঠ সালোনি গান্ধী বলেন, “সারা দিন মরিয়া চেষ্টা চালিয়েও দিল্লিতে একটাও ভেন্টিলেটর জোগাড় করতে পারিনি আমরা। একটা ভেন্টিলেটর থাকলে হয়তো এভাবে চলে যেতে হতো না পণ্ডিতজিকে, দেশ হারাত না দিকপাল এক সংগীত ব্যক্তিত্বকে। ‘
রাজন মিশ্রের পরিজন টুইটারে ভেন্টিলেটর চেয়ে আবেদন করার পর থেকেই শুরু হয় নানাবিধ দাবি-পাল্টা দাবি। একটি মহল থেকে দাবি করা হয়, ওই টুইট দেখে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা করা হয়।
সেখানে তাকে ভর্তির করার আগেই প্রয়াত হন রাজন। কিন্তু এ দাবি নাকচ করে দেন প্রয়াতের পরিজনরা। তারা বলছেন, একটা ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা গেলে এভাবে চলে যেতে হতো না বেনারস ঘরানার সংগীতশিল্পীকে।
এ দিকে রাজনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে টুইট করেছেন নরেন্দ্র মোদীদি, “রাজন মিশ্রের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। বেনারস ঘরানার এই প্রথিতযশা শিল্পীর মৃত্যু ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। ”
সরোদ মায়েস্ত্রো আমজাদ আলী খানের প্রতিক্রিয়া, “পণ্ডিত রাজন মিশ্রর প্রয়াণে আমি শোকাহত। আমাদের সময়ের কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম সেরা তিনি। তার আত্মা শান্তি পাক।সোমবার সকালে কভিড বিধি মেনে রাজন মিশ্রের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায়ও সাড়ে তিন লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে। মারা গেছেও রেকর্ড পরিমাণ। আক্রান্ত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে অক্সিজেন সংকট দিন দিন গুরুতর হচ্ছে। ইতিমধ্যে অক্সিজেনের অভাবের অনেক রোগীর মৃত্যুর খবর এসেছে দেশটির গণমাধ্যমে।