পরিসংখ্যানের এই হিসাব ঘরের বাইরের চা খাওয়ার ভিত্তিতে প্রণীত। ঘরে-বাইরে মিলিয়ে চা পানের মোট পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, যারা মোটামুটি ভাবে স্বাস্থ্য সচেতন, তারা প্লাস্টিক কাপের চা এড়িয়ে চলেন। পরিবর্তে পরিবেশ-বান্ধব ভেবে কাগজের কাপে চা খেয়ে স্বস্তি পান তারা। কিন্তু এতেও যে বিপদের কবল থেকে রেহাই নেই, তা প্রকাশ পেয়েছে গবেষণায়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাগজের কাপকে গরম চা ঢালার মতো টেকসই ও উপযোগী করে তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে আপাত-অদৃশ্য ‘হাইড্রোফোবিক ফিল্ম’ তথা প্লাস্টিকের আস্তরণ।
এই আস্তরণ গরম চা-কফির ছোঁয়া পেলেই দুই মাইক্রোমিটার থেকে পাঁচ মিলিমিটার আকারের উপাদান বা মাইক্রোপ্লাস্টিক কণায় ভেঙে যায় এবং যা অতিদ্রুত রক্তের সঙ্গে মেশে। ফলে নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা ও বিপদের উদ্ভব হয় শরীরের ভেতরে। অন্য এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, একজন মানুষ খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে প্রতি বছর গড়ে অন্তত ৬৮,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা উদরে প্রবেশ করান, যা শরীরের পক্ষে আপাতত অতটা উদ্বেগের কারণ নয়। কারণ, এসব বস্তুকণা মল-মূত্রের সঙ্গে কিছুটা বেরিয়ে যায়। কিন্তু বিপদ অন্যত্র এবং তা চা কিংবা কফির সঙ্গে জড়িত। বহু মানুষ আছেন, যারা বাড়ির বাইরেও, যেখানে-সেখানে চা না-খেলে ছটফট করেন। তারা আছেন বিরাট বিপদে।
গবেষণা রিপোর্ট জানাচ্ছে, প্রতি দিন গড়ে তিন কাপ চা খেলে ৭৫,০০০ মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা চায়ের সঙ্গে গলাধঃকরণ করা হয়। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক আয়ন প্যালাডিয়াম, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতুর বাহক হিসেবে কাজ করে, এবং মুখ ও গলার ক্যানসারের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এই উপাদানগুলো কমিয়ে দেয় রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও। উল্লেখ্য, একটি কাগজের কাপে ১০০ মিলিলিটার গরম জলের থেকে অল্প সময়েই ক্লোরাইড, সালফেট ও নাইট্রেট আয়ন-সহ প্রায় ২৫,০০০ মাইক্রন মাইক্রোপ্লাস্টিক নির্গত হয়। ফলে একে আর চা বা কফি বলা যাবে না, বলতে হবে রূপান্তরিত বিষ, যা প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত, পান করছি আপনি, আমি আর ভেতরে ভেতরে নিজের দেহে তৈরি করছি মারাত্মক রোগের ডিপো।