নতুন প্রতিনিধি, আমবাসা, ১৬ মে।। কবে প্রতীক্ষার অবসান হবে জানা না থাকলেও আশায় বুক বাঁধছেন সবাই। ইট ভাটা শ্রমিকদের এই রোজনামচা দেখা গেল আমবাসার এক ইটভাটায়। আর এই ছবি জেলার সমস্ত ইটভাটায় মোটামুটি একইরকম। গোটা রাজ্যের ইটভাটাগুলোর ছবি কমবেশি একই রকম। মরশুম আসার আগেই আড়কাঠি বা তথাকথিত শ্রমিক সর্দারদের হাত ধরে ঝাড়খন্ড এবং বিহার থেকে দক্ষ শ্রমিকের আমদানি হয় ভাটাগুলোতে। মরশুমের শেষে আবার শ্রমিকেরা ফিরে যান নিজের জায়গায়। তারপর বছরভর অপেক্ষা। এই চিরাচরিত চিত্রপটে অনেকটাই বদল এসেছে এবার। সৌজন্যে করোনা ভাইরাস। আড়কাঠি মারফত শ্রমিকরা এসে পৌঁছে গেছেন যারযার নির্ধারিত ভাটায়। কিছুদিন কাজও করেছেন। ইট পোড়ানোর জন্য গেছে চুল্লীতে। কোথাও আবার ইট বেরিয়ে এসেছে বিক্রির জন্য। ফলে শ্রমিকদের ঘরে ফেরার সময় এসে গেছে। কিন্তু লক ডাউনের জেরে সে আশায় গুড়ে বালি। সড়ক পথ এবং রেল যোগাযোগ বন্ধ। এ অবস্থায় রীতিমতো আতান্তরে পড়েছে পরিবারগুলো। তবে এসময় মালিকের পাশাপাশি সরকারও এগিয়ে এসেছে। এক চা শ্রমিক পিন্টু কেওট ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। কাজ করছেন আমবাসার এক ইট ভাটায়। তিনি জানালেন,”এখানে খাবারের সমস্যা হচ্ছে না তেমন। সরকার থেকে এক হাজার টাকাও পেয়েছি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন। বাড়ি ফিরতে চাই আমরা। পরিবার তাকিয়ে রয়েছে আমাদের দিকে”। আরেক শ্রমিক চন্দন মাহাতো এসেছেন এসেছেন পশ্চিমবাংলা থেকে। তিনি জানালেন, “খাবার কোনো সমস্যা নয়। আমাদের মালিক সাহায্য করছেন। সরকার থেকে টাকা পেয়েছি। কাজ না করেও মজুরি পাচ্ছি। কিন্তু আমরা বাড়িতে না গেলে পরিবার অভূক্ত থাকবে। তাই বাড়ি ফিরতে চাই”। একই অভিব্যক্তি আরো বহু আটকে পড়া শ্রমিকের। ঘরে ফেরার ডাক আসায় রেল লাইনের দিকে তাকিয়ে তারা কবে রেল চলবে সশব্দে। কবে তাদের ঘরের দিকে যাত্রা শুরু হবে সেটাই এখন দেখার।