স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারি।। গত বেশ কয়েকমাস ধরে রাজ্য কংগ্রেস প্রদ্যুৎ নির্ভর হয়ে এডিসি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুপ্ত বাসনা পোষণ করলেও যেই মাত্র প্রদ্যুতের তিপ্রা মথায় আইপিএফটি যোগ দিয়েছে তখন একেবারে ৯০ ডিগ্রি পাল্টি খেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস৷ রবিবার কংগ্রেস ভবনে এডিসি নির্বাচন নিয়ে জনজাতি গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করে পীযূষ কান্তি বিশ্বাস স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, বিজেপির সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে সম্পর্ক রয়েছে এমন কোনো দলের সাথে রাজ্য কংগ্রেস যেমন যাবে না তেমনিভাবে এমন কোনো দলকে রাজ্য কংগ্রেস নির্বাচনে আঁতাতেও কাছে টানবে না৷
শ্রী বিশ্বাস বলেন, কংগ্রেস দল রবিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এডিসি এবং নিগম ভোটের নির্বাচনে একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে৷ তবে বিজেপি বিরোধী সমমনোভাবাপন্ন যে কোনো দলের জন্যই প্রদেশ কংগ্রেসের দরজা খোলা৷ রবিবারের বৈঠকে প্রায় সমস্ত অংশের জনজাতি অংশের নেতৃত্বই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, তারা এডিসি ভোটে একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে৷ পাহাড়ে সংগঠন দুর্বল হলেও নিজের সত্ত্বা কোনোদিন অন্যের হাতে তুলে দিতে নারাজ তারা৷ জনজাতি অংশের নেতৃবন্দের কাছ থেকে এই ধরনের আশ্বাস পেয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাহাড় ভোটে তারা একাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে৷ এদিকে মহারাজার তিপ্রা মথায় আইপিএফটির যোগদানের বিষয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পীযূষ কান্তি বিশ্বাস অভিযোগ করেন, আইপিএফটি দলটি হলো সুবিধাবাদী৷ তা না হলে বিজেপির সাথে ঘর করে এমনকী মন্ত্রিসভায় দুইজন মন্ত্রী থাকা সত্বেও তারা কিভাবে মহারাজার তিপ্রা মথায় যোগ দিয়ে পাহাড় ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে৷
সরকারেও থাকবে আবার সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এটাকে তিনি সুবিধাবাদীদের সঙ্গে তুলনা করতে চান৷ এদিন আইএনপিটি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্ণের জবাব দিতে গিয়ে শ্রী বিশ্বাস বলেন, আইএনপিটি দলের সাথে কংগ্রেসের সবসময় সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে৷ যেহেতু মহারাজার তিপ্রা মথা থেকে এখনো তারা ডাক পাননি৷ তাই পরবর্তী সময় যদি আইএনপিটি কংগ্রেসের সাথে আঁতাত করে পাহাড় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায় তাহলে কংগ্রেসের কোনো আপত্তি নেই৷ তিনি বলেন, আগামী এডিসি নির্বাচনে পাহাড়ে জনজাতি অংশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আরো অধিক ক্ষমতার দাবিকে সামনে রেখেই কংগ্রেস দল নির্বাচনী প্রচারে ময়দানে নামবে৷
ইতিমধ্যেই দলের শাখা সংগঠনগুলিকে এই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে৷ এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্র এবং রাজ্য বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন তিনি৷ শ্রী বিশ্বাস অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের ভুল অর্থনীতির কারণেই দেশের অনেক সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে এই সরকার৷ বর্তমানে সরকারের বিদ্যুৎ দফতরকেউ বিক্রি করে দেওয়ার একটা কৌশল নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্য বিজেপি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পীযূষ কান্তি বিশ্বাসের অভিযোগ, রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ে কাজ ও খাদ্যের অভাব৷ অনাহারে অর্ধাহারে ভুগছেন গিরিবাসীরা৷ অবিলম্বে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় গিরিবাসীদের জন্য কাজ ও খাদ্যের দাবিতে রাজ্যব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি৷ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সহসভাপতি তাপস দে, রাজ্য নেত্রী লক্ষ্মী নাগ এবং মুখপাত্র রাহুল সাহা সহ অন্য নেতৃবৃন্দ৷