মনমোহন সিং সরকার থাকাকালীন যখন পেট্রলের দাম বেড়েছিল, তখন তো অমিতাভ বচ্চন ও অক্ষয় কুমারের মতো তারকারা এক চুল জায়গা ছাড়েননি। তখন তো খুব টুইট করতেন। আজ তারা নীরব।’’ এর পর সোজাসুজি বলিউডের দুই প্রভাবশালী তারকাকে হুমকি দিয়ে বসলেন নানা, ‘‘যে ছবিগুলোতে অমিতাভ ও অক্ষয় রয়েছেন, মহারাষ্ট্রে সেই ছবির শুটিং বন্ধ করে দেওয়া হবে।
হয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের দেশদ্রোহী নীতির বিরুদ্ধে কথা বলুন, নয়তো আমরা শুটিং বন্ধ করে দেব।’’মনমোহন শাসিত ভারতে যখন পেট্রলের দাম বাড়ে, তখন দুই তারকা পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির নিন্দা করেন। ২০১২ সালের ২৪ মে, অমিতাভ টুইটে লেখেন, “পেট্রলের দাম বেড়েছে ৭.৫ রুপি। পেট্রল স্টেশনের কর্মী গাড়ির মালিককে জিজ্ঞেস করলেন, কত টাকার পেট্রল দেব? মালিক জানালেন, ২/৪ রুপির পেট্রল আমার গাড়ির ওপরে ছিটিয়ে দাও। জ্বালিয়ে দাও।”সম্প্রতি দেশটিতে পেট্রলের দাম বেড়েই চলেছে। যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে এক লিটার পেট্রলের দাম বেড়ে হয়েছে ৯৬.৩২ রুপি, ডিজেল ৮৭.৩২ রুপি। টানা ১০ দিন ধরে বাড়ছে দাম।
বিজেপি শাসিত দুই রাজ্য রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যেই পেট্রলের দাম ১০০টাকা ছাড়িয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, অমিতাভ বা অক্ষয়ের টুইটার, ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুক পেজ ঘুরে এসে এ বিষয়ে কোনো পোস্ট নেই। সে জন্যই ক্ষুব্ধ মহারাষ্ট্রের শিবসেনার শরিক দল কংগ্রেস। এরপর ভিডিওতে শুটিং বন্ধের হুমকি দেন। ২০১৮ সালে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন নানা। তার ধারণা, ‘‘তাদের অত সাহস নেই যে মোদি সরকারের স্বৈরচারিতার বিরুদ্ধে কথা বলবেন। কংগ্রেসের কাছে আশ্চর্যের বিষয়, দাম বৃদ্ধির পরিমাণ তখনকার থেকে এখন অনেক বেশি।
তাও ওরা চুপ।’’ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতার মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা রাম কদম বলেন, ‘‘এত প্রতিভাধর মানুষদের হুমকি দেওয়াটা অন্যায়।’’ এক সময় কংগ্রেসের খুব কাছের মানুষ ছিলেন অমিতাভ। স্কুলের বন্ধু সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর প্রস্তাবে ১৯৮৪ সালে অভিনয় থেকে সংক্ষিপ্ত বিরতি নিয়ে রাজনীতিতে যোগও দেন। এলাহাবাদ লোকসভা আসনে উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হেম্মতি নন্দন বহুগুণার বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাঁড়ান তিনি।
রেকর্ড ভোট পার্থক্যে জেতেন। এর কিছুদিন পর রাজীবের নাম বোফর্স কেলেঙ্কারিতে জড়ানোয় অমিতাভ রাজনীতি থেকে সরে আসেন। অন্য দিকে, অক্ষয় কুমার বর্তমানে দেশটির শাসকদলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। সম্প্রতি রামমন্দির নির্মাণের জন্য টাকা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভিডিও পোস্ট করেন অনলাইনে। সরকারি বিভিন্ন বিজ্ঞাপনেও তাকে নিয়মিত দেখা যায়।