আজকের অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিশিষ্টজনদের হাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই পুরস্কারগুলি তুলে দেওয়া হয়৷ রাজ্য নাগরিক সম্মান পেয়েছেন পাঁচজন এবং পূর্ণরাজ্য দিবস পুরস্কার পেয়েছেন নয়জন৷ প্রথমবার ত্রিপুরা বিভুষণ সম্মান পেয়েছেন পদ্মশ্রী দীপা কর্মকার ও ত্রিপুরা ভুষণ সম্মান পেয়েছেন ক্রীড়াবিদ আর্শিয়া দাস৷ আজকের অনুষ্ঠানে ’বিকাশের পথে ত্রিপুরা’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, কৃষিমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া, খাদ্যমন্ত্রী মনোজকান্তি দেব, মুখ্য সচিব মনোজ কুমার, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের বিশেষ সচিব অভিষেক চন্দ্রা, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷
ত্রিপুরা পূর্ণরাজ্য দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে রাজ্যপাল রমেশ বৈস পূর্ণরাজ্য দিবসকে একটি খুশির মূহুর্ত হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা লাভ করার পিছনে রয়েছে এক দীর্ঘ ইতিহাস৷ ত্রিপুরাতে গণতান্ত্রিক কাঠামোর বিবর্তনের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়া বেগবান হয়-১৯৪৯ সালের ৫ অক্টোবর ত্রিপুরার ভারতীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর৷ কিভাবে ত্রিপুরার শেষ রাজা বীর বিক্রম মাণিক্য স্বাধীনতার আগেই ভারত ইউনিয়নের সাথে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তার মৃত্যর পর মহারাণী কাঞ্চনপ্রভা দেবী ভারতভুক্তির চুক্তির স্বাক্ষর করেন এবং কিভাবে ত্রিপুরায় প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, জনজাতি কল্যাণে স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের জন্ম, ত্রি-স্তরীয় পঞ্চায়েতী রাজ, নগর উন্নয়নে পুর পরিষদের সৃষ্টি ইত্যাদি প্রক্রিয়ার কথাও রাজ্যপাল তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন৷
রাজ্যপাল রমেশ বৈস বলেন, বিগত বছর কোভিড-১৯ এর কারণে রাজ্য তথা সবাই এক সংকটপূর্ণ সময়ের সম্মখীন হয়েছে৷ এখনো আমরা সেই কঠিন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি এবং সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বিশেষ করে প্রথম সারির যোদ্ধাদের পরিষেবা ও কাজের মাধ্যমে আমরা শীঘই এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷ তিনি তার ভাষণে বিগত আড়াই বছরে রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনায় প্রায় ২.৫ লক্ষ এবং প্রধান মন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় ৩ লক্ষ ক’ষক উপক’ত হয়েছেন৷ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বহু মানুষ উপক’ত হয়েছেন আয়ুমান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা, ত্রিপুরা হেলথ অ্যাসিউর্যান্স স্কীম ফর পুওর ইত্যাদি প্রকল্পে৷
মানব সম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখ করেন সি বি এস ই পাঠক্রম চালু করা, ২৮টি বাংলা মিডিয়াম বিদ্যালয়কে ইংলিশ মিডিয়ামে রূপান্তরিত করা, বছর বাঁচাও, সুুপার-৩০ লক্ষ্য, মুখ্যমন্ত্রী বি এড অনুপ্রেরণা যোজনা ইত্যাদি প্রকল্পের কথা৷ তিনি বলেন, তেমনি ছাত্রছাত্রীদের পেশাদারী ও কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়াতেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে আগরতলা বিমানবন্দরকে মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দর হিসেবে নতুন নামাকরণ করে উন্নয়নের কাজ চলছে, ট্রেনের সংখ্যা বেড়েছে এবং সরকার আরও নতুন নতুন সড়ক জাতীয় সড়কে উন্নীত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷
তেমনি বিভিন্ন নাগরিক কেন্দ্রিক পরিষেবাকে অনলাইন করা হয়েছে৷ যেমন গণবন্টন ব্যবস্থায় আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক লেনদেন ব্যবস্থা, ই-পয়েন্ট অব সেল, ’ওয়ান নেশন ওয়ান কার্ড’ ইত্যাদি পরিষেবা চালু হয়েছে৷ জনজাতিদের উন্নয়নে বর্তমান রাজ্য সরকারের উদো্যগের কথা উল্লেখ করে রাজ্যপাল বলেন, স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ২৮ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার৷ ১২টি জনজাতি অধ্যুষিত ব্লককে ’অ্যাসপিরেশন্যাল ব্লক’ হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে এবং তাদের জন্য গুণগত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে ১৮টি নতুন একলব্য বিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে৷
উপজাতি কল্যাণ দপ্তরের নাম জনজাতি কল্যাণ দপ্তর করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা এম এস এম ই আবাসন, পানীয় জল, গ্রামীণ উন্নয়ন, পর্যটন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটেছে৷ তাছাড়া রাজ্যে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনায় দরিদ্রদের জন্য আরও কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এখন রাজ্যেও কোভিড-১৯ এর টিকাকরণ শুরু হয়েছে৷ সমস্ত সমস্যা পেরিয়ে আগামী দিনগুলিতে রাজ্যের উজ্জল সময় আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷
ত্রিপুরা পূর্ণরাজ্য দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ২০১৮ সালে রাজ্যের বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে ত্রিপুরা দ্রত সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে৷ ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে শীর্ষে থাকার দৌড়ে নিজের স্থান করে নিয়েছে৷ এখন দেশের অন্য সমস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে থাকার লক্ষ্যে কাজ শুরু হয়েছে৷ ১৯৭২ সালে ত্রিপুরা পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা পেলেও বাস্তবে কি ত্রিপুরা সবক্ষেত্রে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে, এই প্রশ ছুড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির অনুন্নয়নের জন্য এক সময় নানা বাহানা দেখানো হত৷ বলা হত এই অঞ্চলের রাজ্যগুলি দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেক দূর৷
তাই কেন্দ্রের নজর থেকেও দূরে রয়েছে এই রাজ্যগুলি৷ কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবার পর এই অঞ্চলের প্রতি কেন্দ্রের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে গেছে৷ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ তুলে বলেন, এখন কীভাবে উত্তর-পূর্বা’লের উন্নয়ন হচ্ছে৷ তিনি বলেন, উন্নয়নের কাজ করার জন্য মানসিকতা চাই, আত্মবিশ্বাস চাই৷ সর্বোপরি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য কাজ করার ইচ্ছাশক্তি চাই৷ এখন এই অঞ্চল এক নতুন দিশা নিয়ে চলেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার জনতার সরকার৷ মানুষের উন্নয়নের জন্য এই সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রতিফলনও পাওয়া যাচ্ছে৷ গণবন্টন ব্যবস্থার সুুষ্ঠ রূপায়ণের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা ইতিমধ্যেই দেশের প্রথম তিনটি রাজ্যের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে৷
রাজ্যের একশ শতাংশ ভোক্তাকে ইপিডিএস-র আওতায় আনা হয়েছে৷ সৌভাগ্য যোজনার আওতায় রাজ্যের ১০০ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে৷ একশ শতাংশ ব্যক্তিকে আধার কার্ড দেওয়া হয়েছে৷ প্রতি পরিবারে ব্যাঙ্ক একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশ সফলতা এসেছে৷ তিনি বলেন, আগে নবম শ্রেণীতে পড়য়া শুধুমাত্র এস সি, এস সি ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হত৷ এখন নবম শ্রেণীর সব অংশের ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হচ্ছে৷ আয়ুমান ভারত জন আরোগ্য যোজনায় রাজ্যের ৮৬.৫৬ শতাংশ পরিবার ই-কার্ড পেয়েছেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার আগ পর্যন্ত রাজ্যের মাত্র তিন শতাংশ পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল সরবরাহ করা হত৷
বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর এ বিষয়ে অটল জলধারা মিশন নামে নতুন একটি প্রকল্প চালু করা হয়৷ ২০২২ সালের মধ্যে এই প্রকল্পে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সবার বাড়িতে নিরাপদ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে৷ ইতিমধ্যেই পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয় জল ৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২২ শতাংশ বাড়িতে পৌঁছে গেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাবার জন্য যারা যোগ্য তাদের সবাইকে ২০২২ সালের মধ্যে ঘর তৈরী করে দেওয়া হবে৷ রাজ্যের ৯০ শতাংশ বাড়ি থেকে বিভিন্ন বর্জ পদার্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে৷ রাজ্যের একশ শতাংশ ভোক্তাকেই এক দেশ এক কার্ড এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এখন ভোক্তারা যে কোন রেশন সপ থেকেই তাদের বরাদ্দকৃত সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাজ্যের বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হবার পর বেশ কিছু প্রকল্প চালু করা হয়েছে যা আগে ছিলনা৷ সাবমে স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে, গড়ে ওঠেছে লজিস্টিক হাব৷ মৈত্রী সেতু নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চাশ হাজার ভূমিহীন কৃষককে চিহ্ণিত করে তারা যাতে স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারেন সেজন্য তাদের ঋণ দেওয়া হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনার মাধ্যমে ছোট ব্যবসায়ীদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরে রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ ২০১৭ সালে রাজ্যের মানুষের মাথা পিছু আয়ের পরিমাণ যেখানে ছিল ১ লক্ষ ৪৪৪ টাকা এখন তা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৬৩৬ টাকা৷
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণও এই সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ বিশেষ করে ত্রিপুরা থেকে পণ্য রপ্তানীর পরিমাণ ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বিভিন্ন জাতীয় সড়ক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে৷ এ বিষয়ে যে সমস্ত কর্মসূচি রূপায়ণ করা হচ্ছে তার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,১৯০ কোটি টাকা৷ এছাড়া সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও ৪টি বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন করার আশ্বাস দিয়েছেন৷ প্রস্তাবিত এই প্রকল্পগুলির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭,৫৩০ কোটি টাকা৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ৬ হাজার হেক্টর এলাকা অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষের আওতায় আনা হয়েছে। আরও ১৫ হাজার হেক্টর এলাকায় এই চাষ হবে৷ নতুন করে ৫০ হাজার হেক্টর এলাকাকে চিহ্ণিত করা হয়েছে যেখানে ভুট্টা, মাসকলাই ডালের চাষ করা হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা ও মুখ্যমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা রূপায়ণের ক্ষেত্রে ত্রিপুরা ভারতের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি আগের বছরের তুলনায় উন্নতি হয়েছে৷ সড়ক দুর্ঘটনা ২০১৯ সালের তুলনায় ২৮.৮ শতাংশ কমেছে৷ তেমনি মোট অপরাধও হাস পেয়েছে ২২ শতাশ৷ অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরা রাজ্য হিসেবে ছোট হতে পারে কিন্তু এর বিশাল ইতিহাস ও সাংস্ক’তিক ঐতিহ্য রয়েছে৷ এই রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সবার৷ তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ত্রিপুরাকে স্বয়ংসম্পর্ণ করে তোলা৷ তিনি বলেন, আত্মনির্ভর ভারত মানে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর নয়৷
আত্মনির্ভরতা আসে আত্মবিশ্বাস থেকে৷ আত্মবিশ্বাস যেখানে নেই সেখানে পরিবর্তনও সহজে আসেনা৷ এই তিন বছরে পরিবর্তন এসেছে রাজ্যের মানুষের মনেও৷ মানুষ সব বাধা অতিক্রম করে ত্রিপুরাকে কিভাবে শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা বানানো যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করছেন৷ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজস্বমন্ত্রী এন সি দেববর্মা ত্রিপুরার ভারতভূক্তি এবং এর পরবর্তী সময়ের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৫৬ সালে রি অর্গানাইজেশন কমিশন তাঁদের রিপোর্টে ত্রিপুরাকে আসামের সঙ্গে মিশিয়ে দেবার সুুপারিশ করেছিল৷ রাজ্যের মানুষ এই সুুপারিশ মেনে নেয়নি৷ তারা ত্রিপুরাকে আসামের সঙ্গে না জড়তে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবী জানান৷ এটা ত্রিপুরার ইতিহাসের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ রাজ্যের মানুষ সে সময় রুখে না দাড়ালে ত্রিপুরার ইতিহাস আজ অন্যরকম হত৷ তিনি বলেন, ভারতভূক্তির সময়ও ত্রিপুরাকে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত করার চক্রান্ত হয়েছিল৷ এই সমস্ত কিছু প্রতিকূলতার মোকাবিলা করেই ত্রিপুরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন মুখ্য সচিব মনোজ কুমার৷ সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ’এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরাকে’ সামনে রেখে ত্রিপুরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রত উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে৷ বিগত আড়াই বছরে উদ্যোগ ক্ষেত্রে ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুব উদ্যোগীরা এল এই ডি বাল, বায়ো ফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের ক্ষেত্রে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে৷ সম্পতি যে ১৯টি নতুন প্রকল্প ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার বাস্তবায়ণ চলছে৷ ফলে রাজ্যের জি এস ডি পি দ্রত বাড়ছে৷ বিগত আড়াই বছরে মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে ২৩ শতাংশ৷ তেমনি ক’ষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র, আবাসন প্রকল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ত্রিপুরা নজির সৃষ্টি করেছে৷