কপালের ভাঁজ দূর করবেন কীভাবে জানা আছে?

অনলাইন ডেস্ক, ১৮ ডিসেম্বর।। চিন্তামনিকে মনে আছে? আরে বিজ্ঞাপনের সেই মানুষটা যে সারা দিন এত চিন্তা করে যে কপালে পাহাড়ের মতো উঁচু উঁচু লাইন তৈরি হয়ে গেছে। সেই লাইনগুলোকে কীভাবে মোছা যায় বলুন তো! নিশ্চয় ভাবছেন এমন প্রশ্ন অপনাকে করছি কেন, তাই তো? একবার আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ান তো, তাহলেই দেখবেন উত্তর পেয়ে গেছেন। আজকের ডেটে আমরা সবাই কম-বেশি স্ট্রেসের শিকার।

চাকরি, পরিবার, সেভিংস এইসব নানা বিষয় নিয়ে প্রতি মুহূর্তে আমরা ভেবে চলেছি। যার সরাসরি প্রভাব পরছে আমাদের ত্বকের উপর। ফলে শুধু কপালে নয়, সারা মুখে প্রকাশ পাচ্ছে বলিরেখা। সেই সঙ্গে ত্বক যাচ্ছে বুড়িয়ে। এমন পরিস্থিতিতে কপালের বলিরেখা কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াবেন কীভাবে সে সম্পর্কে জানা আছে?উত্তর যদি না হয়, তাহলে এই প্রবন্ধটি আপনার জন্যই লেখা। কারণ এই লেখায় এমন কিছু ঘরোয়া টোটকা সম্পর্কে আলোচনা করা হল-

১. নারকেল তেল: এই প্রকৃতিক উপাদানটি ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এতে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের অন্দরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বলিরেখা কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে অল্প পরিমাণ নারকেল তেল নিয়ে কপালে এবং সারা মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। এমনটা প্রতিদিন করতে পারলে দেখবেন অল্প দিনেই কপালের বলিরেখা কমে যাবে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে।

২. রেড়ীর তেল: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে এই তেলটির অন্দরে উপস্থিত রাইসোনেলিক অ্যাসিড ত্বকের পরিচর্যায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষত কপালে সৃষ্টি হওয়া বলিরেখা কমাতে রেড়ির তেলের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। শুধু তাই নয়, নারকেল তেলের মতো এই তেলটিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা নানাভাবে সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে কয়েক ফোঁটা রেড়ীর তেল নিয়ে ভাল করে কপালে মাসাজ করতে হবে। এমনটা কয়েকদিন করলেই দেখবেন ফল পেতে শুরু করেছেন।

৩. বেশি করে খেতে হবে সাইট্রাস ফল: পাতি লেবু, কমলা লেবু বা মৌসম্বি লেবুর মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাইট্রাস ফল বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে নানাবিধ ভিটামিনের ঘাটতি তো দূর হয়ই। সেই সঙ্গে ত্বকের উপকারি ফ্লেবোনয়েডের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার প্রভাবে ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। যে কারণে কমতে শুরু করে বলিরেখা। বাড়ে সৌন্দর্য। প্রসঙ্গত, এই সব ফলের রস খেতে যদি ইচ্ছা না করে, তাহলে আরেকভাবেও সাইট্রাস ফলগুলিকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কীভাবে? অল্প পরিমাণে লেবুর রস বানিয়ে নিন। তারপর তাতে তুলো চুবিয়ে সেই তুলো কপালে সৃষ্টি হওয়া বলিরেখার উপর লাগান। কিছু সময় পর ভাল করে মুখটা ধুয়ে নিন। এমনটা প্রতিদিন করলেই দেখবেন আর কেউ আপনাকে চিন্তামনি বলে খেপাচ্ছে না।

৪. অলিভ অয়েল: অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল নিয়ে গরম করে নিন। তারপর একটু ঠান্ডা হলে তা কপালে এবং সারা মুখে লাগিয়ে কম করে ১০ মিনিট ভাল করে মাসাজ করুন। এমনটা করলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরে আসে। সেই সঙ্গে স্কিনের অন্দরে জলের অভাব দূর হয়। শুধু তাই নয় সারা মুখে রক্তচলাচল বেড়ে যাওয়ার কারণে বলিরেখা তো কমেই। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যতাও চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।

৫. অ্যালোভেরা এবং ডিম:  ২ চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং ১ টা ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রনটি কপালের পাশাপাশি সারা মুখে ভাল করে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন সারা মুখ। প্রসঙ্গত, সপ্তাহে ২-৩ বার এই ফেস মাস্কটির সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা করলে স্কিনের অন্দরে ভিটামিন ই এবং ম্যালিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যা বলিরেখা কমানোর পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

৬. পেট্রোলিয়াম জেলি: এখন থেকেই যদি কপালে ভাঁজ পরতে শুরু করে তাহলে বন্ধু নিয়মিত পেট্রোলিয়াম জেলিকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! আসলে এই উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান ত্বকের অন্দরে জলের ঘাটতি হতে দেয় না। ফলে বলিরেখা কমতে একেবারেই সময় লাগে না। তবে এক্ষেত্রে একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। তা হল, আপনি যদি প্রায়শই ব্রণর সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে ভুলেও প্রেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করবেন না। তাতে ত্বকের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে কিন্তু!

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?