করোনার উৎস খুঁজতে উহানে যাচ্ছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীরা

অনলাইন ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর।। করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) উৎস খুঁজে বের করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ১০ জন বিজ্ঞানীর একটি দল আগামী মাসে চীনের উহান শহর সফর করবেন। বিবিসি জানায়, করোনার উৎস ও সংক্রমণ নিয়ে স্বাধীন তদন্ত পরিচালনার ব্যাপারে বেইজিং কখনোই খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করেনি। উহানে তদন্ত পরিচালনা করার অনুমতি পেতে ডব্লিউএইচও’র দীর্ঘদিন যাবৎ আলোচনা করতে হয়েছে চীনের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।

বিভিন্ন ধরনের প্রাণী বিক্রি করা হয়, উহান শহরের এমন একটি বাজার থেকে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এর আসল উৎস কী, তা নির্ণয় করার প্রশ্নে শুরু থেকেই জটিলতা ছিল।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে যে, সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শুরুতে গোপন করেছে চীন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাগ্‌যুদ্ধও চলে।

তদন্তকারী দলের একজন জীববিজ্ঞানী সংবাদ সংস্থা এপিকে জানান যে, ডব্লিউএইচও কারো ওপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্যে এই তদন্ত পরিচালনা করছে না, বরং ভবিষ্যৎ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। জার্মানির রবার্ট কোক ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী ফ্যাবিয়ান লিনডার্টজ বলেন, ‘কোনো দেশ দোষী, তা খুঁজে বের করার জন্য এই তদন্ত নয়।

আসলে কী হয়েছে, তা খুঁজে বের করা এবং সেই তদন্ত থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ ঝুঁকি এড়াতে পারবো কিনা, সেই চেষ্টাই করবো আমরা। ’ তিনি জানান, চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের এই সফরে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার শুরুটা কীভাবে হয়েছিল এবং এটি উহান শহরেই উদ্ভূত হয়েছিল কিনা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তারা।

ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে ধারণা করা হচ্ছিল হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি জীবিত প্রাণী বেচাকেনার বাজারে ভাইরাসটি প্রথমবার শনাক্ত হয় এবং সেখান থেকেই মানুষের দেহে আসে ভাইরাসটি। তবে কিছু গবেষণা থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে, এমন করোনাভাইরাস বহুকাল ধরেই বাদুড়ের দেহে উপস্থিত ছিল। উহানের সি ফুড মার্কেটটির দিকে বারবার আঙুল উঠলেও বিষয়টি এখনো প্রমাণিত হয়নি।

করোনা সংক্রমণে জানুয়ারির শেষ দিকে পুরো শহরে আরোপ করা হয় লকডাউন। কয়েক ঘণ্টার নোটিশে ঘরবন্দী হয়ে পড়ে মানুষ। ৭৬ দিন পর সেটি তুলে নেয়া হয়। এর এক দেড় মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে নতুন করোনাভাইরাসটি হানা দেয়। ফেব্রুয়ারিতে এর নাম রাখা হয় কভিড-১৯। অল্প সময়ের মধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশ রীতিমতো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে আমেরিকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়।

এখন পর্যন্ত ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছে। করোনা মোকাবিলায় অনেক দেশে এখনো লকডাউন ও কারফিউ জারি থাকলেও উহান গত এপ্রিলেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গেছে। শহরটিতে প্রাণ পেলেও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে সি ফুড মার্কেটটি। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সাড়ে ১৬ লাখের বেশি মানুষ করোনায় মারা গেছেন। মোট শনাক্ত হয়েছে সাড়ে সাত কোটির মতো।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?