অনলাইন ডেস্ক, ৭ ডিসেম্বর।। খুব শীঘ্রই দেশে নতুন সংসদ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। চলতি মাসের ১০ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কয়েকদিনের মধ্যেই নির্মাণকাজ শুরু হত। কিন্তু সরকারের সেই ইচ্ছায় বাধ সাধল দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নতুন সংসদ ভবনের কোনও নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে অবশ্য কেন্দ্র কোনও বাধা বলে মানতে রাজি নয়। কেন্দ্র মনে করছে আদালতের এই নির্দেশের ফলে তারা আরও সাবধানে এবং সতর্ক হয়ে কাজ করতে পারবে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
প্রস্তাবিত নতুন সংসদ ভবনকে ‘গণতন্ত্রের নতুন মন্দির’ বলে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। অনেকেই নতুন সংসদ ভবনকে আত্মনির্ভর ভারতের অন্যতম নিদর্শন বলে উল্লেখ করেছেন। সরকারের ইচ্ছা, ২০২২-এ দেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে নতুন সংসদ ভবনে লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু করা। কিন্তু সরকারের সেই ইচ্ছার পথে বাধা হয়ে দাড়াল সর্বোচ্চ আদালত।
এদিন দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রের সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রজেক্টের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ওই সমস্ত অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি আদালত। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ এম খানউইলকরের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এই নির্দেশ জারি করে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতের এই নির্দেশ মেনে চলার কথা জানিয়েছেন।
মেহতা বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনেই হবে। নির্দিষ্ট দিনে ভূমি পুজো হবে, আইনি কাগজপত্র নিয়ে যেটুকু সমস্যা রয়েছে তা খুব শীঘ্রই মিটিয়ে ফেলা হবে। তবে আদালতের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত শুরু হবে না নির্মাণ কাজ। এমনকি একটি গাছও কাটা হবে না। উল্লেখ্য, টাটা প্রোজেক্ট এবং কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই নতুন সংসদ ভবন তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বর্তমান সংসদ ভবনের সামনের এলাকা ঢেকে রাখা হয়েছে। মূলত শব্দ এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদক্ষেপ।
নতুন সংসদ ভবন তৈরি হচ্ছে ৬৪ হাজার ৫০০ বর্গমিটার জায়গায়। ত্রিভুজাকৃতি এই সংসদ ভবন তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ৯৭১ কোটি টাকা। নতুন সংসদ ভবনে লোকসভায় ৮৮৮ জন এবং রাজ্যসভায় ৩৮৪ জন সদস্য বসতে পারবেন। যা বর্তমান সংসদ ভবনের তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি। আগামী দিনে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এটা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।