গন্ডাছড়া দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু, গুরুতর আহত ছেলে

গন্ডাছড়া, ২৮ মার্চ: মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফেরা হল না পিতার। বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক অটো দুর্ঘটনায় পিতা পুত্র দু’জনই গুরতর আহত হলেও রাতে গুরতর আহত পুত্রকে হাসপাতালের পাশের শয্যায় রেখে চোখের জল ঝরাতে ঝরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন পিতা। তখন গুরতর আহত পুত্র পাশের শয্যায় শুইয়ে পিতার অকাল প্রয়াণের দৃশ্য দেখে শুধু চোখের জল ঝরানো ছাড়া কোন উপায় ছিল না।

ছোট বড় যান দুর্ঘটনা গন্ডাছড়া মহকুমায় নতুন কিছু নয়। প্রতি সপ্তাহে গন্ডাছড়া মহকুমায় ২/৩টি যান দুর্ঘটনা ঘটছেই। হেলদোল নেই স্থানীয় মহকুমা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের। বধিরের ভূমিকায় পুলিশ প্রশাসন। অভিযোগ গন্ডাছড়া মহকুমায় যে সমস্ত যাত্রীবাহী ছোটবড় যান এবং মালগাড়ি রয়েছে সেইগুলির সিংহভাগ চালকদেরই ড্রাইভিইং লাইসেন্স নেই। কারণ ওই চালকরা কেউ রিকশা চালক, না হয় ঠেলা চালক। ফলে গন্ডাছড়া মহকুমায় যান দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলছে।একের পর এক যান দুর্ঘটনায় বহু মানুষকে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার যে অটো দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং মর্মান্তিক।

গন্ডাছড়া মহকুমার অন্তর্গত রতননগরের বাসিন্দা খেরণজয় ত্রিপুরা। তাঁর ছেলে দিবাকর ত্রিপুরা ছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। যথারীতি ছেলে দিবাকরের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। পরীক্ষা শেষে বাবা খেরণজয় ছেলে দিবাকরকে জানায় তাড়াহুড়ো করোনা। আমি বৃহস্পতিবারদিন এসে তোমাকে বাড়িতে নিয়ে আসবো। বৃহস্পতিবার বাবা খেরণজয় ত্রিপুরা যথারীতি গন্ডাছড়ায় আসেন এবং ছেলের খুশী মতো কিছু কেনাকাটা করেন এবং ওইদিন বিকাল চারটা নাগাদ রতননগরের নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে বাবা এবং ছেলে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে একটি ব্যাটারি চালিত ইরিক্সায় উঠেন। ইরিক্সায় মোট ছয়জন যাত্রী ছিল। ইরিক্সাটি মহকুমার পাখি ত্রিপুরা পাড়া পাড় হয়ে কিছুটা পথ এগিয়ে ছোট একটি বাঁক নিতেই দ্রুতগতিতে থাকা উল্টে যায়।

ওই দুর্ঘটনায় ইরিক্সায় থাকা বাবা খেরণজয় ত্রিপুরা এবং ছেলে দিবাকর গুরতরভাবে আহত হয়। দুজনকেই গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাবা এবং ছেলে দুজনে পাশাপাশি শয্যায় চিকিৎসারত ছিলেন। একে অপরের দিকে তাকালেও কিছু বলার শক্তি ছিল না। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা খেরণজয় ত্রিপুরাকে কুলাই জেলা হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্ত বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালের এম্বুলেন্স -এ তোলার কিছুক্ষন আগে আহত ছেলের দিকে তাকিয়ে চোখের জল ফেলতে ফেলতে বাবা খেরণজয় ত্রিপুরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

চোখের জলে বাবার অকাল মৃত্যু প্রত্যক্ষ করে পাশের শয্যায় শুইয়ে থাকা ছেলে দিবাকর ত্রিপুরা। বাবার মৃত্যুতে একেবারেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে ছেলে। সংবাদ পেয়েই হাসপাতালে যান এমডিসি ভূমিকানন্দ রিয়াং, বিজেপির মন্ডল সভাপতি ধন্যমানিক ত্রিপুরা, আইপিএফটি নেতৃত্ব চরণবাসী ত্রিপুরা, এডিসির সাব -জ্যোনাল চেয়ারম্যান হিরণ্ময় ত্রিপুরা, এডিসি -র শিক্ষা দপ্তরের চেয়ারম্যান হরিশ দেব্বর্মা সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?