বক্সনগর, ২৪ ফেব্রুয়ারি : ছোট ভাইকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বড় ভাইকে। ঘটনা সিপাহীজলা জেলার মেলাঘরের তৈবান্দালের ধনমুড়া এলাকায়। ভ্রাতৃঘাতী ব্যক্তির নাম বিজয় দেববর্মা।
জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র সাউন্ড বক্সের ভলিউম বাড়ানোকে কেন্দ্র করে ঘটল হৃদয়বিদারক ঘটনা। বড় ভাইয়ের হাতে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের। আর সেই ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া। ২২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেলাঘরের তৈবান্দাল ধনমুড়া এলাকায় বড় ভাই বিজয় দেববর্মা ও ছোট ভাই অমিতাভ বচ্চন দেববর্মার মধ্যে তর্ক বির্তক হয়। বিষয়টি প্রথমে তুচ্ছ মনে হলেও মুহূর্তের মধ্যে তা ভয়াবহ রূপ নেয়। বিজয় দেববর্মা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছোট ভাই অমিতাভের ওপর আক্রমণ চালায়। গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমিতাভের।
এই হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত বিজয় দেববর্মা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় এবং অভিযুক্তের খোঁজে অভিযান শুরু করে।
মেলাঘর থানার পুলিশ ও তৈবান্দাল ফাঁড়ির পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায়। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে বিজয় দেববর্মার বিয়ে ঠিক হয়েছিল মির্জা এলাকায় এবং সম্ভবত সে সেখানেই আত্মগোপন করে আছে। এই সূত্র ধরে শনিবার গভীর রাতে পুলিশ মির্জা এলাকায় কনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
মেলাঘর থানার ওসি দেবাশীষ সাহা জানান, দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর অবশেষে অভিযুক্তকে গ্রেফতা করা সম্ভব হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি, যাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এমন নির্মম ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, একটি তুচ্ছ বিষয় কীভাবে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এমন মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে, তা কল্পনাতীত। এলাকার প্রবীণরা মনে করেন, পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন বজায় রাখার জন্য সহনশীলতা ও সংযম জরুরি। এক মুহূর্তের রাগের বশে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনা একটি পরিবারকে চিরদিনের মত ধ্বংস করে দেয়।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিজয় দেববর্মাকে আদালতে তোলা হবে এবং আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অমিতাভের পরিবারের সদস্যরা ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন এবং অভিযুক্তের কঠোর শাস্তি চেয়েছেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন পারিবারিক সহিংসতা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাগরিকদের যেকোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেছে, যাতে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যায়।