আগরতলা, ১৬ জানুয়ারি : পুলিশ সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার আইন শৃঙ্খলা জনিত ইস্যুতে তথ্য দিয়ে বিরোধীদের মুখে ঝামা ঘষে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এ ডি নগর পুলিশ মাঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সঠিকভাবে কাজ করে চলছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর এ ডি নগর পুলিশ গ্রাউন্ডে ত্রিপুরা পুলিশ সপ্তাহ প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা এবং রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন। অনুষ্ঠানে রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন শাখার প্যারেড পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরা পুলিশকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে প্রয়াস জারি রয়েছে। নতুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার এবং রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিম এই দুই থানাকে আধুনিকীকরণ করা হবে। থানার বাড়িগুলি ভেঙে পরিকল্পনা অনুসারে বহুমুখী বিল্ডিং তৈরি করা হবে। যেখানে নিচে থাকবে পুলিশের কার্যালয় এবং উপরে থাকবে পুলিশ কোয়ার্টার। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীদের কনক্লেভে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থানাগুলিকে আধুনিকীকরণের উপর জোর দিয়েছেন। সেই অনুসারে পূর্ব এবং পশ্চিম থানা দিয়ে শুরু হবে পুলিশের আধুনিকীকরণ।
মুখ্যমন্ত্রী আরো জানান, বিরোধীরা কথায় কথায় আইন-শৃঙ্খলার অবনতির কথা বলে। কিন্তু তথ্য চাইলে তারা আর বলতে পারে না। ২০২৪ সালের আইন-শৃঙ্খলা জনিত বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে পাঁচজনের ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে ১৩ জনের। ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সাতজনের এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে ১৪ জনের। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৪ সালে বিভিন্ন অপরাধের জন্য ৩৮ জনের কারাদণ্ড হয়েছে। তিনি বলেন এই তথ্য প্রমাণ করে রাজ্য পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সঠিকভাবে কাজ করছে।
এদিন এই অনুষ্ঠানে তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৪ সালে রাজ্যে সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধ হ্রাস পেয়েছে ৪৫ শতাংশ। শারীরিক অপরাধ কমেছে ৩৮ শতাংশ। দাঙ্গা হাঙ্গামা হ্রাস পেয়েছে ৭৫ শতাংশ। হামলা সংক্রান্ত অপরাধ কমেছে ৩৭.২ শতাংশ এবং নারীঘটিত অপরাধ ৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরা পুলিশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। অনেকেই বলেন পুলিশ নাকি ভক্ষক। কিন্তু ত্রিপুরা পুলিশের ক্ষেত্রে এই কথা প্রযোজ্য নয়। তিনি জানান, বীর শহীদ পুলিশ কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুলিশকে স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।
প্রসঙ্গত, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন। অনুষ্ঠানে পুলিশের বিভিন্ন শাখার আধিকারিকদের হাতে পুরস্কার প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।