কৈলাসহর, ২০ নভেম্বর : ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের পুরাতন ডাকবাংলো থেকে রাংগাউটি অব্দি রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে প্রতিদিন এই রাস্তায় ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যান চালক সহ এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে কয়েকবার স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পরও রাস্তা সংস্কার করে দেওয়া হয়নি। এরফলে গ্রামবাসী সহ যান চালকরা একপ্রকার বাধ্য হয়ে বুধবার কুবঝার এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
রাস্তা অবরোধের ফলে কয়েকশো নিত্য যাত্রী সহ স্কুল ছাত্র ছাত্রীরা আটকে পড়ে। অবরোধের দুই দিকে বহু গাড়িও আটকে পড়ে। খবর পেয়ে অবরোধস্থলে কৈলাসহর থানার বিশাল পুলিশ এবং টি.এস.আর বাহিনী পৌঁছে। অবরোধকারীরা গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। অবরোধ স্থলে প্রচন্ড উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
উল্লেখ্য, কৈলাসহর শহরের পুরাতন ডাকবাংলো থেকে রাংগাউটি অব্দি রাস্তাটি শহর উত্তরাঞ্চল এলাকার মানুষের শহরে আসার একমাত্র রাস্তা।১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় পঁচিশ হাজার মানুষ এই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য। এই রাস্তা সংস্কারের জন্য দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্দোলনের পর অবশেষে গত ২০২১সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় কাগজে পত্রে এই রাস্তার কাজ শুরু হলেও মূলত ২০২২সালের শেষদিকে রাস্তার কাজ শুরু হয়ে ২০২৩সালের মাঝামাঝি সময়ে এই রাস্তার কাজ সমাপ্ত হয়েছিল।
অবরোধকারীদের অভিযোগ, রাস্তার কাজ করার সময় থেকেই একেবারে চূড়ান্ত নিম্নমানের কাজ হয়েছিল। এমনকি সবার অজান্তে নির্মানকারী সংস্থা রাতের অন্ধকারে ঠান্ডা বিটুমিন দিয়ে এই রাস্তাটি নির্মাণ করেছিল। যারফলে কাজ সমাপ্ত হবার একবছরের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙ্গে যায় এবং চলাচলের অযোগ্য হয়ে যায়। প্রতিদিন এই রাস্তার উপর ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। এতকিছুর পরও প্রশাসন উদাসীন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের হেলদোল নেই।
অবরোধকারীরা প্রশাসনের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আরও বলেন, গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে মহকুমাশাসক কিংবা জেলাশাসক বা পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের কয়েকবার লিখিত ভাবে এবং মৌখিক ভাবে জানানোর পাশাপাশি ডেপুটেশন দিয়ে জানানোর পরও আজ অব্দি কোন ধরনের ভূমিকা নেয়নি প্রশাসন। গ্রামবাসীদের চাপে পড়ে চলতি বছরের দূর্গা পূজার এক সপ্তাহ পূর্বে দপ্তরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে এসে রাস্তার প্রকৃত অবস্থা পরিদর্শন করেছিলেন। পরিদর্শন চলাকালীন গ্রামবাসীরা আধিকারিকদের ঘেরাও করে জানতে চেয়েছিলেন কবে থেকে এই রাস্তার কাজ শুরু হবে। সেইসময় আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন দূর্গা পূজার পরেই রাস্তার কাজ শুরু হবে। এই আশ্বাস পাওয়ার পর সেইসময় আধিকারিকরা ঘেরাও মুক্ত হয়েছিলেন।
কিন্তু দূর্গা পূজার পর লক্ষ্মী পূজা এবং কালী পূজা হয়ে গেলেও রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। তাই গ্রামবাসীরা বাধ্য হয়ে বুধবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। যতক্ষন অব্দি প্রশাসনের বড় ধরনের আধিকারিকরা অবরোধস্থলে এসে রাস্তার কাজ কবে থেকে শুরু হবে এই ঘোষণা দেবেন না, ততক্ষণ অব্দি অবরোধ চালবে বলেও জানান অবরোধকারীরা। পরে প্রশাসনের আধিকারিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে অবরোধ আন্দোলন প্রত্যাহার করা হয়।
