কৈলাসহর, ১৭ নভেম্বর : ঊনকোটি জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় চরম অব্যবস্থার অভিযোগ উঠেছে। দপ্তরের উদাসীনতার কারণে হাসপাতালের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অক্সিজেন প্ল্যান্ট গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অক্সিজেন প্ল্যান্টটি ২০২২ সালে চালু হওয়ার পর কয়েক মাস কাজ করেই বিকল হয়ে যায়। কিন্তু মেরামতের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় জেলার চিকিৎসা পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
দপ্তরের উদাসীনতা ও পরিকল্পনার অভাবে প্ল্যান্টটি চালু হওয়ার পর থেকেই সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছ থেকে মেরামতের কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। সদ্য নিযুক্ত মেডিকেল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডাঃ রোহন পাল জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তবে দ্রুত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় রোগী ও তাদের পরিবারের মধ্যে চরম হতাশা তৈরি হয়েছে।
অক্সিজেন প্ল্যান্টের পাশাপাশি ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে সিটি স্ক্যান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। আধুনিক চিকিৎসায় সিটি স্ক্যানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিষেবা বন্ধ থাকায় রোগীদের দূরের শহরগুলিতে যেতে হচ্ছে, যা সময় এবং অর্থের অপচয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির রোগীদের জন্য এই পরিস্থিতি এক বড় ধাক্কা।
অক্সিজেন প্ল্যান্ট ও সিটি স্ক্যানের মত গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলি অচল অবস্থায় পড়ে থাকায় সরকারের স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। লক্ষাধিক টাকা খরচ করে নির্মিত অবকাঠামো যদি সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা না যায়, তবে তা সাধারণ মানুষের জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।
স্থানীয় বাসিন্দারা দপ্তরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে এই ধরনের অব্যবস্থাপনা সাধারণ মানুষের জীবনকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। জেলার বাসিন্দারা দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অক্সিজেন প্ল্যান্ট মেরামত এবং সিটি স্ক্যান পরিষেবা পুনরায় চালু করা না হলে জেলার স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নের পরও যদি তা মানুষের কাজে না আসে, তবে এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কিছু হতে পারে না। সাধারণ মানুষের জীবনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দপ্তরের অবিলম্বে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ঊনকোটি জেলার জনগণ।