আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা বাঙালি দল

আগরতলা, ১৯ অক্টোবর : শনিবার আমরা বাঙালি সদর কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে ৩ দফা দাবিকে সামনে রেখে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আমরা বাঙালি দলের সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্রপালসহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।

এদিন সচিব সংবাদ মাধ্যমকে জানান গত ১৭ই অক্টোবর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ নাগরিকত্ব আইনের ‘৬-এ’ ধারাকে বৈধ ঘোষণা করে ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পর অসমে আসা বাঙালী শরনার্থীদের নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য নয় বলে ঘোষণা করেছে। উল্লেখ্য যে, ৬-এ ধারাটি নাগরিকত্ব আইনে যুক্ত হয়েছে ১৯৮৫ সালে অসম চুক্তি সম্পাদনের পর। তার আগে ১৯৫৫ সালের ভারতের নাগরিকত্ব আইনে ছিল- জন্মসূত্রে, উত্তরাধিকার সূত্রে, বৈবাহিক সূত্রে অথবা ভারতের সংবিধান মেনে কোনরাজ্যে কমপক্ষে ৫ বছর একটানা বসবাস করলে যে কোন মানুষই নাগরিকত্ব অর্জনের যোগ্যতা পেতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণ তথা অসম চুক্তির ফলে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধন ও তৎমোতাবেক আদালতের রায়ের ফলে অসম, ত্রিপুরা, উত্তর পূর্বাঞ্চলসহ গোটা দেশে বাঙালীদের মনে এখন নাগরিকত্ব অর্জনের প্রশ্নে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

গৌরাঙ্গ রুদ্রপাল বলেন, আতঙ্কের আরো কারণ হল অসম রাজ্যে ২০১৯ সালে এন আর সি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রায় ২০ লক্ষের মত বাঙালিকে বিদেশী চিহ্নিত করে ডিটেনশান ক্যাম্পে পাঠাবার ব্যবস্থা করা ও সাম্প্রতিক কোর্টের ঘোষণা অনুযায়ী অসম- পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা দেশে লক্ষ লক্ষ বাঙালির ভবিষ্যৎ প্রশ্ন চিহ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই অসমচুক্তি পুরোপুরি কার্যকরী করার যেমন তোড়জোর শুরু হয়ে গেছে তেমনি শীঘ্রই গোটা উত্তরপূর্বাঞ্চল তথা ত্রিপুরাসহ অন্যান্য অঞ্চলেও যে বাঙালও বিতাড়নের দাবী ওঠবে এই আশঙ্কা তীব্রভাবে এখন কাজ করতে শুরু করেছে।

তিনি জানান, কোর্টের বর্তমান ঘোষণায় ত্রিপুরার ১৯৮০ সালের জুনের বাঙালী গণহত্যা ও ১৯৮৩-র অসমের নেলীর বাঙালি গণহত্যা নায়কেরা যে উৎসাহিত হবে বলার অপেক্ষা রাখে না। বাঙালিদের আরও ভয়ের কারণ হল স্বাধীনতার পর থেকে ধারাবাহিক বঞ্চনা, অত্যাচারের পরও কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপির মতো সর্বভারতীয় কোন রাজনৈতিক দল আজ পর্যন্ত বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার নিয়ে বিধানসভা বা লোকসভায় একটা কথাও বলেনি। আমরা বাঙালিদল সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাঙালি বঞ্চনার বিরুদ্ধে ও অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবীতে লড়াই করে চলেছে।

দলের সচিব আরও জানান, বর্তমানে কোর্টের রায়জনিত উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা বাঙালি দল খুবই উদ্বিগ্ন। তাই এই পরিস্থিতিতে বাঙালি জাতিকে রক্ষার্থে দলের পক্ষ তিনটি দাবি রাখা হয়েছে। সেগুলি হল দেশভাগের জাতীয় প্রতিশ্রুতি ‘যখনি পূর্ববঙ্গের সংখ্যালঘু বাঙালিরা সীমানা অতিক্রম করবে তাদের স্বাগত জানানো হবে’- তা বাস্তবায়ণ করতে হবে। যেমন পঞ্জাবী উদ্বাস্তুদের ক্ষেত্রে করা হয়েছিল দেশভাগের অব্যবহিত পরেই। বাঙালির রেজিমেন্ট গঠন করতে হবে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?