সাব্রুম, ২৭ সেপ্টেম্বর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর থেকেই বাংলাদেশে চরম অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সেখানকার মুসলিম মৌলবাদীরা সংখ্যালঘু হিন্দু বৌদ্ধ ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জনগণের উপর প্রচন্ড নির্যাতন শুরু করেছে। শুক্রবার রাজ্যের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণ ও মগ সোসিও কালচারাল অর্গানাইজেশন দক্ষিণ ত্রিপুরার সাব্রুমের মেলারমাঠে বিশাল সমাবেশে মিলিত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগণের উপর নির্যাতন বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণে।
এদিনের সমাবেশের শেষে ওয়ার্ল্ড বুদ্ধিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব ভেন্ট ধাম্মাপিয়া সাংবাদিকদের বলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণ সব সময় শান্তির পক্ষে থাকেন। শান্তি ও মৈত্রী হল বুদ্ধের দর্শন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী
জনগণ এই আদর্শকে বিশ্বাস করেন এবং শান্তিপ্রিয় জীবন যাপনেই তাঁরা বিশ্বাসী। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সে দেশের মৌলবাদীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণের উপরে যে নির্যাতন, অত্যাচার ও নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়ে যাচ্ছে তা মোটেই কাম্য নয়। তিনি বাংলাদেশের মুসলিম জনগণ ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আবেদন জানান যে, তাঁরা যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি যেন সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর চলমান অত্যাচার নিপীড়ন বন্ধ করার জন্য সক্রিয় হন। অন্যথায় বিষয়টি জাতিসংঘের গোচরে আনা হবে। মিছিল ও সমাবেশের শেষে বৌদ্ধ জনগণের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি সাব্রুম মহকুমা শাসকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন ।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, মাটিরাঙ্গা, দীঘিনালা, রাঙ্গামাটি প্রভৃতি এলাকাতে মুসলিম মৌলবাদীরা দলবদ্ধভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জনগণের উপর নির্মম সন্ত্রাস শুরু করেছে। খুন, ধর্ষণ অগ্নিসংযোগ ইত্যাদির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তারা ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করেছে। ফলে বৌদ্ধ ও হিন্দু সংখ্যালঘু জনগণ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এর মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। সম্পদহানি, বৌদ্ধমন্দিরে হামলাসহ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের উপর নামিয়ে আনা হয়েছে নির্মম অত্যাচার। এই অবস্থায় নিরীহ সংখ্যালঘু মানুষেরা সংঘবদ্ধভাবে মৌলবাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামলে সে দেশের সেনাবাহিনী তাদের পক্ষে না দাঁড়িয়ে উল্টে তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্মম নির্যাতন শুরু করে।