কলকাতার আর জি কর হাসপাতাল ইস্যুতে কৈলাসহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা

কৈলাসহর, ১৯ আগস্ট : কলকাতার আর.জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবিতে ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ সংঘটিত হয় সোমবার দুপুরে। মূলত কৈলাসহরের স্বাস্থ্য কর্মী, কৈলাসহর পুরপরিষদ, অল ত্রিপুরা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনায় এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ সংগঠিত হলেও শহরের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন সহ সমাজের সকল অংশের নাগরিকরা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, কলকাতার আর.জি কর মেডিকেল কলেজেই কতর্ব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সারা দেশের চিকিৎসক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষেরা প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। ৩১ বছর বয়সী ওই তরুণীর মৃতদেহের ময়না তদন্তে চরম যৌন লাঞ্ছনার প্রমাণ মিলেছে এবং কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনাটি প্রথমে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অতি দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। ব্যতিক্রম নয় ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরার কৈলাসহর মহকুমাও।

এদিনের এই বিক্ষোভ মিছিলটি কৈলাসহরের ঊনকোটি কলাক্ষেত্র প্রাঙ্গন থেকে বের হয়ে পাইতুর বাজার, সেন্ট্রাল রোড, নেতাজি কর্নার পরিক্রমা করে পুনরায় উনকোটি কলাক্ষেত্র প্রাঙ্গনে এসে সমাপ্ত হয়। ঊনকোটি কলাক্ষেত্র প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সভা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায়, ভাইস চেয়ারপার্সন-নিতীশ দে, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ঊনকোটি জেলার সভাপতি চিকিৎসক সত্যজিৎ পাল, অল ত্রিপুরা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট এসোসিয়েশনের ঊনকোটি জেলা সভাপতি সজল কান্তি সোম, প্যাথলজি এন্ড ল্যাবরেটরি অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখর বিশ্বাস সহ কৈলাসহর মহকুমার সমস্ত চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মী সহ শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিকরা।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন চপলা দেবরায় আর জি কর হাসপাতালে এই নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন অবিলম্বে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমি একজন নার্স, অবসর গ্রহণের পর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন হয়েছি। আর জি কর হাসপাতালের মত ঘটনা যেন দেশের কোথাও পুনরাবৃত্তি না হয় তার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের সামাজিক পরিবর্তনেরও প্রয়োজন আছে। প্রত্যক অভিভাবককে ছোটবেলা থেকেই তাদের সন্তানদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রতিটা সন্তান যেন সুস্থ স্বাভাবিক মানষিকতা নিয়ে বড় হয় তার চেষ্টা করতে হবে। কারণ কোন সুস্থ মানুষের পক্ষে এধরনের বর্বরোচিত ঘটনা করা সম্ভব নয়।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা করতে গিয়ে চিকিৎসক সন্দীপন ভট্টাচার্যী বলেন, এই ঘটনার দ্রুত ও সুষ্ঠ বিচার হোক। আর জি কর হাসপাতালের মত দেশের প্রথম সারির একটি মেডিকেল কলেজে যদি একজন চিকিৎসকের সাথে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তাহলে দেশের লক্ষ লক্ষ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা যে নিরাপদ নয় তা সহজেই অনুমান করা যায়। চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মীরা যদি নিরাপদ না হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে পরিষেবা বিঘ্নিত হবে। দেশের প্রতিটি নারীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়াও ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ঊনকোটি জেলার সভাপতি চিকিৎসক সত্যজিৎ পাল, অল ত্রিপুরা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে মানিক লাল‌ রায়, প্যাথলজি এন্ড ল্যাবরেটরি এসোসিয়েশনের পক্ষে শেখর বিশ্বাস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সভায় আলোচনা করেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?