কৈলাশহর, ২ জুলাই : মঙ্গলবার সকালে স্কুল শিক্ষকের বদলির বিরোধীতা করে শিক্ষার্থীরা আনন্দবাজার এলাকায় ধর্মনগর-কৈলাশহর সড়ক অবরোধ করে এবং স্কুলের গেইটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
জানা গিয়েছে, তিন মাস আগে আনন্দবাজার জীবন ত্রিপুরা এইচএস স্কুলে যোগদানকারী শিক্ষক ব্রজলাল নাথের বদলির নোটিশের প্রেক্ষিতে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত। ছাত্রদের মতে, স্কুলের ছাত্ররা শিক্ষক ব্রজলাল নাথের সাথে একটি ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। বিশেষ ক্লাস এবং পড়াশোনার ক্ষেত্রে সহায়তার জন্য তিনি তৎপর থাকেন।
ছাত্রদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা এবং স্কুল প্রাঙ্গনে গভীর রাতে মদ্যপানের আসরের বিরোধীতা করায় প্রধান শিক্ষক এবং কিছু এসএমসি কমিটির সদস্যদের ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ফলে ওই শিক্ষককে বদলির নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
সোমবার থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে যা মঙ্গলবার আরও তীব্র হয় যখন তারা স্কুলের গেটে তালা দিয়ে ধর্নায় বসে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য স্থানীয় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের হস্তক্ষেপ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল এলাকার বিশিষ্ট বিজেপি নেতা কান্তি গোপাল নাথ, শক্তি কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্দ্রমণি নাথ এবং স্থানীয় বিজেপি নেতা নারায়ণ নাথ এবং দেবাশীষ নাথের তৎপরতায়। ছাত্ররা শেষ পর্যন্ত ছত্রভঙ্গ হয়ে স্কুল হলের দিকে ফিরে যায়।
অভিযোগ, হলের ভিতরে কান্তি গোপাল নাথ ও তাঁর সহযোগীরা ছাত্রদের বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এছাড়াও, দেবাশীষ নাথ বেশ কয়েকটি ছাত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। যার ফলে তাদের মধ্যে চারজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধর্মনগর ফায়ার ব্রিগেড অচেতন মেয়েদের চিকিৎসার জন্য উত্তর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে কান্তি গোপাল নাথ, দেবাশীষ নাথ, ইন্দ্রমণি নাথ এবং নারায়ণ নাথের বিরুদ্ধে ধর্মনগর থানায় মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঘটনাটি এলাকায় উত্তেজনা বাড়িয়েছে। ছাত্ররা দৃঢ়ভাবে বলেছে যে তারা স্থানীয় বিজেপি নেতাদের প্রভাব সহ্য করবে না এবং শিক্ষক ব্রজলাল নাথের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে অটল থাকবে।
বর্তমানে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর আহত ছাত্রীরা হলেন মৌটুশি দাস (দশম শ্রেণি), পূজা নাথ (ষষ্ঠ শ্রেণি), ঈশিতা নাথ এবং অনুপ্রিয়া নাথ ( অষ্টম শ্রেণি)।