কৈলাসহর, ২৯ মার্চ।। ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে প্রিয় ঋতু বসন্তকে আকড়ে ধরে পালিত হল “দোল উৎসব ২০২৪”। বসন্ত আসেই যেন আমাদের হৃদয়ে অকারণ খুশির দোলা দিতে। যেদিকে চোখ যায়, যেন রঙের রায়ট। এদিকে চোখ গেল তো গোধূলিরঙা পলাশ, আরেক দিকে রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া। দখিনের জানালা খুললেই মিষ্টি বাতাস আর সারাদিন নরম কুসুমের মতো রোদ। এমন দিনেই তো উৎসব জমে ওঠে। বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বনের সূচনাও হয় এমনই এক ঋতুতে, যখন মানুষের মন ঠিক যেন কবিগুরুর ভাষায় ‘অলক্ষ্য রঙে’র ছোঁয়ায় অকারণের সুখে’ ভরে ওঠে।
২৯ মার্চ শনিবার রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে সকাল এগারোটা থেকে শুরু হয় দোল উৎসব ২০২৪। অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের ঊনকোটি জেলার বরিষ্ঠ আধিকারিক বিশ্বজিৎ দেব। লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়, তাই সংক্ষিপ্ত পরিসরেই আয়োজন করা হয় দোল উৎসবের। শহরের ২৩টি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার প্রায় ৪০০ শিল্পীরা এই দোল উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সম্প্রদায় তাদের নৃত্য ও সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে গোটা অনুষ্ঠানকে এক অন্যমাত্রা এনে দেয়।
এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মহকুমা এলাকার শিল্পীরা পরিবেশন করেন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সাধারণ অংশের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন উপস্থিত সকলেই আবির খেলায় মেতে ওঠেন। এই দোল অনুষ্ঠানে তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের ঊনকোটি জেলার বরিষ্ঠ আধিকারিক বিশ্বজিৎ দেব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অসীম চক্রবর্তী, সংস্কার ভারতী ঊনকোটি জেলা সমিতির সভাপতি অরুপ রতন চক্রবর্তী সহ আরো অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
স্বাগত ভাষণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঋতুরাজ বসন্তের এই উৎসবের। চারদিকে নতুন পাতা আর ফুলের সমাহার। সবার প্রিয় ঋতু বসন্ত। বসন্ত বারবার নানা রঙে ও নানা রূপে ফুটে উঠেছে হাজারও কবির কবিতায়, শিল্পীর তুলির আঁচড়ে। কখনও বন্দনা বসন্তের বাতাসের, তো কখনও আরাধনা বসন্তের ফুলের সুভাসের। এই নির্মম শহরেও মাঝেমধ্যেই শোনা যায় কোনো এক গাছের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা কোকিলের কুহু ডাক। বসন্তই তো ফাগুনের রঙে রাঙিয়ে ওঠার দারুণ উপলক্ষ।
ঊনকোটি জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের বরিষ্ঠ আধিকারিক বিশ্বজীৎ দেব বলেন, রাজ্যের সকল মহকুমার পাশাপাশি কৈলাসহর মহকুমায়ও পালিত হচ্ছে “দোল উৎসব”। ঊনকোটি জেলার কৈলাসহর হল বর্ণময় সংস্কৃতির একটি আতুর ঘর। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক সংস্থার বর্ণময় অনুষ্ঠানে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনকে কেন্দ্র করে যেভাবে শিল্পীরা একত্রিত হয়ে দোল উৎসব পালিত করলেন তা আগামীদিনে শহরের সংস্কৃতিকে আরো বেগবান করবে বলে তিনি আশাবাদী।