আগরতলা, ১৩ মার্চ।। গরীব অংশের মানুষের অধিকারের টাকা এখন সরাসরি তাদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়। এজন্য কোনও কমিশন বা সুপারিশের প্রয়োজন পড়ে না। দেশের সব অংশের মানুষের উন্নয়ন না হলে ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে বিকশিত রাষ্ট্র বানানোর যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তাতে পৌঁছানো সম্ভব হবে না। আজ বিকেলে পিএম-সূর্য জাতীয় পোর্টালের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একথা বলেন। আগরতলার মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ২০১৪ সালে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার সবকা সাথ সবকা বিকাশের লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু করে। যাদের বিশ্বাস সমস্ত কিছুর উপর থেকে চলে গিয়েছিল তাদের কাছেই এই সরকার সবচেয়ে আগে গিয়ে পৌঁছায়। ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা পয়সায় চিকিৎসা করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হচ্ছেন দলিত ও আদিবাসীগণ। দলিত, পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষের কাছে এখন পাকা আবাস, পাকা শৌচালয় রয়েছে। উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনার মাধ্যমে তাদের কাছে বিনামূল্যে গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে গেছে।
মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে পিএম-সূর্য জাতীয় পোর্টালের সূচনা অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, সমাজের সব অংশের মানুষের উন্নতি না হলে কোনও রাজ্য এগিয়ে যেতে পারে না। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। সমাজের যে অংশের মানুষের কথা কেউ কোনোদিন চিন্তাও করেনি সেই মানুষদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। সেই মানুষদের আস্থার প্রতীকের নাম হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি। ত্রিপুরা সরকারও সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যে স্বসহায়ক দলের সংখ্যা ছিল ৪ হাজারের মতো। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজারের কাছাকাছি। প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মহিলা এই দলগুলির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রতিটি কাজই অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে করা হচ্ছে। মিডল ম্যান বলে কোনও শব্দ কোনও কাজেই থাকছে না। প্রযুক্তির ব্যবহার করে বেনিফিসিয়ারিদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা তাদের ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি গ্রহণ করেছেন তার সুবিধা এই অঞ্চলের রাজ্যগুলি দারুণভাবে ভোগ করছে। এই নীতি গ্রহণ করে ত্রিপুরার চেহারাই পাল্টে যাচ্ছে। মৈত্রী সেতু চালু হলে ত্রিপুরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বারে রূপান্তরিত হবে। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়নমন্ত্রী বীরেন্দ্র কুমার জানান, আজ যে পোর্টালের সূচনা হয়েছে এর মাধ্যমে যে কেউ ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, তপশিলি জাতি কল্যাণমন্ত্রী সুধাংশু দাস, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায় উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কয়েকজন সুবিধাভোগীর হাতে ত্রিপুরা সিডিউল্ড কাস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ৪৫ হাজার টাকার ঋণের অনুমোদনপত্র তুলে দেওয়া হয়। এছাড়াও ৫ জনের হাতে আয়ুষ্মান কার্ড তুলে দেওয়া হয়। নগরোন্নয়ন দপ্তরের পক্ষ থেকে ২ জন সাফাই কর্মীকে পিপিই কিট দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে এগুলি তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে পিএম-সূর্য (প্রধানমন্ত্রী সামাজিক উন্নয়ন এবং রোজগার আধারিত জনকল্যাণ) জাতীয় পোর্টালের সূচনা অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ এই অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সমগ্র দেশবাসীর উদ্দেশ্যে আজ এই পোর্টালের সূচনা করেন। মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তপশিলি জাতি কল্যাণ দপ্তরের প্রধান সচিব বি এস মিশ্র।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চার রাজ্যের ৪ জন লাভার্থীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং কিভাবে তারা সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে নিজেদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সেই সম্পর্কে অবহিত হন। দেশের ৪৭০টি জেলার প্রায় ৩ লক্ষ লোক এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হয়েছিলেন।