আগরতলা, ১২ মার্চ।। রাজ্যবাসীর মৌলিক অধিকারকে সুনিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। সরকারের মুখ্য উদ্দেশ্যই হচ্ছে শুধুমাত্র উন্নয়ন। বর্তমান সরকার সবাইকে সাথে নিয়ে রাজ্যের বিকাশে কাজ করছে। বর্তমানে সারা রাজ্যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে। এই সরকার উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনও ধরণের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। আজ আগরতলা পুরনিগমের ৪৩নং ওয়ার্ডের প্রতাপগড় ঋষি কলোনীতে পুকুরের পুনরুজ্জীবন ও সৌন্দর্যায়নের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন।
তিনি বলেন, মানুষের আর্থসামাজিক মান উন্নয়ন না হলে কোনভাবেই কোনও দেশ, রাজ্য, সমাজ বা এলাকার উন্নয়ন হতে পারে না। বর্তমান সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলি পূরণে সচেষ্ট। এই সরকার জনগণের সরকার। প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযান এবং বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ঋষি কলোনী প্রধানত বস্তি এলাকা। পূর্বে এই এলাকার উন্নয়নে সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি। বর্তমান রাজ্য সরকার এই এলাকার উন্নয়নে উদ্যোগী হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগরতলা পুরনিগম সহ ২০টি নগর শাসিত সংস্থাগুলিতে সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চলছে। পরিকাঠামো সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে সড়ক উন্নয়নের কাজ ত্বরানিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অ্যাক্ট ইষ্ট পলিসির মাধ্যমে উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি মনে করেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ছাড়া দেশের উন্নতি হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত হীরা মডেলের বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বর্তমানে ৬টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। আরও ৪টি’র নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও রাজ্যে নতুনমাত্রা সংযোজিত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা শহরকে আধুনিক রূপ দেওয়ার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। মটর স্ট্যান্ড এলাকায় মাল্টি লেভেল কার পার্কিং গড়ে তোলা হচ্ছে। ১ হাজার ফ্ল্যাট বিশিষ্ট লাইট হাউস প্রকল্পেটির কাজও দ্রুত সম্পাদিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ ও আরবান) মিলে রাজ্যে প্রায় ৪ লক্ষ ঘর অনুমোদিত হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে মহিলা পরিচালিত স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ মহিলা এই স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত রয়েছেন। মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও তাদের সুরক্ষা প্রদানে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপসমূহের কথা মুখ্যমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের জনগনের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবার সুবিধা পৌঁছে দিতে রাজ্য সরকার আয়ুষ্মান ভারত-প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার মতো চিফ মিনিষ্টার জন আরোগ্য যোজনা চালু করেছে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র মনিকা দাস দত্ত বলেন, কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর এবং রাজ্যে বর্তমান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দেশে ও রাজ্যে উন্নয়নের ধারা চলছে। তিনি বলেন, এক সময় ঋষি কলোনী এলাকাটি উন্নয়ন শব্দ থেকে বঞ্চিত ছিল। বর্তমানে এই এলাকার উন্নয়নে সরকার উদ্যোগী হয়েছে। এই পুকুরের উন্নয়ন ও সোন্দর্যায়ন এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। আজ এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের কমিশনার ড. শৈলেশ কুমার যাদব বলেন, ৩ কানি থেকে বেশী এই পুকুরটির পুনরুজ্জীবন সৌন্দর্যায়ণ আমরুট প্রকল্পে রূপায়িত হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, কর্পোরেটর অভিজিৎ মল্লিক, ত্রিপুরা জল বোর্ডের চীফ ইঞ্জিনিয়ার মিহির কান্তি গোপ, সমাজসেবী অসীম ভট্টাচার্য্য, চিত্তরঞ্জন দেব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।