আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারী।। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা তাঁর ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও সমস্যাপীড়িত জনগণের সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচি নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন। আজ ‘মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু’ কর্মসূচির ২৮তম পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সমস্যা পীড়িত মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এসে তাদের নানাবিধ সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই এসেছেন চিকিৎসা সংক্রান্ত সহায়তার আর্জি নিয়ে। সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী তৎক্ষনাৎ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ বামুটিয়ার দিয়া শর্মা তার চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। দিয়া শর্মা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ তিনি তার সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদানের আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী দিয়া শর্মার চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন।
যোগেন্দ্রনগরের রাজু চক্রবর্তী এসেছিলেন তার ছেলের চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে। বেসরকারি সংস্থায় স্বল্প বেতনে কর্মরত রাজু চক্রবর্তীর ছেলে গত ১২ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্য রোগে ভোগছে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ রাজু চক্রবর্তী তার ছেলের সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ছেলের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী রাজু চক্রবর্তীর ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে জ্যুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট-এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিবকে নির্দেশ দেন।
রাণীরবাজারের জয়ন্তী দেবনাথ (ভৌমিক) তার ছেলের চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরত জয়ন্তী দেবনাথের ছেলে গত বছরের অক্টোবর মাসে বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় মারাত্মক আঘাত পায়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানোর পরও সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেনি। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি তার ছেলেকে বহিরাজ্যে নিয়ে যেতে চান। সেই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী জয়ন্তী দেবনাথের ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী জয়ন্তী দেবনাথকে রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখার পরামর্শও দেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষ কর্মসূচিতে আজ দক্ষিণ রামনগরের নারায়ণ দাস তার ছেলের চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। নারায়ণ দাসের ছেলেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল। উনার ছেলে বেশ কিছুদিন যাবৎ স্নায়ুরোগে ভোগছেন। চিকিৎসক তার ছেলের অপারেশনের কথা বলেছেন। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার দরুণ নারায়ণ দাস তার ছেলের সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এই অবস্থায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সহায়তার আর্জি জানান।
মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ দাসের ছেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখে জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের নির্দেশ দেন। এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী কর্মসূচিতে আসা ধলেশ্বরের দিপালী সরকার, রামনগরের রাহুল দাস, ইন্দ্রনগরের রাখাল মিত্র সহ প্রত্যেকের সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন আন্তরিক। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিতো, জিবি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী এবং ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ এস দেববর্মা উপস্থিত ছিলেন।