আগরতলা, ১৯ ফেব্রুয়ারী৷৷ ধলাই জেলার কমলপুর আদালতে ধর্ষিতা গৃহবধূর শ্লীলতাহানির ঘটনায় অভিযুক্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বতোষ ধরকে বদলি করা হয়েছে ত্রিপুরা হাইকোর্টে৷ সোমবার হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বিশ্বজিৎ পান্ডে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন৷ সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বতোষ ধর আপতত ত্রিপুরা হাইকোর্টে থাকবেন যতদিন না পর্যন্ত তাঁকে কোথাও নিযুক্তি দেয়া হচ্ছে৷ তাছাড়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী জানা গিয়েছে, কমলপুর আদালতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বতোষ ধর এর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মধুমিতা বিশ্বাস৷
প্রসঙ্গত, ধর্ষিতা গৃহবধূ জবানবন্দি দিতে গিয়ে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে৷ ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার ধলাই জেলার কুমলপুর আদালতে৷ এই ব্যাপারে অতিরক্ত জেলা ও দায়রা জজের কাছে ওই গৃহবধূ গোটা ঘটনা জানিয়ে একটি অফিডেভিট দাখিল করেছেন৷ সেই সাথে গৃহবধূর স্বামী কমলপুর বার এসোসিয়েশনের সম্পাদকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন৷ ওই গৃহবধূ কমলপুর প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন৷
জানা গিয়েছে, ধলাই জেলার কচুছড়া থানাধীন মেচুড়িয়া চৌদ্দকার্ড এলাকার গৃহবধূ একটি ধর্ষণের ঘটনায় আদালতে এলে তখন প্রথম শ্রেণীর বিচারক বিশ্বতোষ ধর মহিলাকে নিজের চেম্বারে ঢুকিয়ে মহিলার বুকে ও গোপন জায়গায় হাত দেয়৷ তিনি মহিলাকে বলেন তাদেরকে কাজ করতে গিয়ে এমন করতে হয়৷ ওই গৃহবধূ পরবর্তী সময়ে গোটা ঘটনা জানিয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সূর্য্যদেও সিং এর কাছে অভিযোগ দায়ের করেন৷ অফিডেভিটের মাধ্যমে দায়ের করা অভিযোগে ওই গৃহবধূ উল্লেখ করেছেন, যে ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ তারিখে আনুমানিক আড়াইটা নাগাদ কচুছড়া থানার ০০২/২০২৪ নম্বর মামলায় পুলিশের ১৬৪(৫) ধারা মোতাবেক জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাস্ট ক্লাস এর চেম্বারে ডাকা হয় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য৷ তখন ওই গৃহবধূকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একা ভিতরে যাওয়ার জন্য ডাক দেন এবং মহিলা পুলিশকে বাইরে থাকতে বলেন৷
ওই গৃহবধূ ভিতরে যাওয়ার পর বিচারক দরজা বন্ধ করে দেন ভিতর থেকে এবং তার কাছে জানতে চান ঘটনার বিস্তারিত৷ ওই গৃহবধূ তার উপর হওয়া ধর্ষণের বয়ান দিতে থাকেন৷ একসময় বিচারক বিশ্বতোষ ধর বলেন এভাবে বললে হবে না এবং তিনি চেয়ার থেকে উঠে এসে গৃহবধূকে জড়িয়ে ধরেন এবং ব্লাউজের ভিতর হাত ঢুকিয়ে স্তনে চাপ দেন এবং শাড়ী তোলে গোপনাঙ্গে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দেন৷ এই ঘটনায় গৃহবধূ রীতিমতো হতবাক হয়ে পড়েন৷ তিনি জানতে চান এসব কি করছেন, তখন বিচারক নাকি বলেছেন যে এটাই কোর্টের নিয়ম৷ এটাই তাকে করতে হয়৷ এসব শুনে গৃহবধূ কান্নাকাটি শুরু করে দেন৷ তখন বিচারক তাকে ছেড়ে দেন এবং বাইরে গিয়ে বসতে বলেন৷ ওই গৃহবধূ গোটা ঘটনা বাইরে গিয়ে স্বামীর কাছে জানান৷
এদিকে গৃহবধূর স্বামী গোটা বিষয়টি জানিয়ে কমলপুর বার এসোসিয়েশনের সম্পাদকের কাছে একটি দরখাস্ত জমা দিয়েছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য৷ পাশাপাশি ওই গৃহবধূ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজের কাছেও একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন সুবিচারের জন্য৷ পরে গৃহবধূ কমলপুর প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেও গোটা ঘটনা জানিয়েছেন৷