আগরতলা, ২৮ জানুয়ারি।। একের পর এক স্বর্ণালংকার সহ নগদ টাকা চুরি যাচ্ছে ঘর থেকে। অবশেষে বাড়ির মালিকের পাতানো ফাঁদে তথা মোবাইল ক্যামেরায় ধরা পড়ল আসল ঘটনা। মালিকের চোখ ফাঁকি দিয়ে দামী জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যায় গৃহপরিচারিকা। ঘটনা আবিস্কার হতেই বাড়ির মালিকের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করল গৃহপরিচারিকাকে। ঘটনা রাজধানী আগরতলা শহরের ভাটি অভয়নগর ডঃ ইন্দ্রনীল নন্দীর বাড়িতে।
বাড়ির মালিক ডাঃ ইন্দ্রনিল নন্দী জানান, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওনার বাড়িতে গৃহপরিচারিকা হিসাবে কাজে রাখা হয় পশ্চিম ভুবনবন এলাকার বাসিন্দা যমুনা ভট্টাচার্যকে। যমুনা ভট্টাচার্যকে গৃহপরিচারিকা হিসাবে কাজে রাখার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে ওনাদের বাড়িতে চুরি হতে থাকে। টাকা, পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ইত্যাদি একের পর এক চুরি হচ্ছিল। যমুনা ভট্টাচার্য তাদের বিশ্বস্ত ছিল। তাই যমুনাকে সন্দেহ করেননি। এরই মধ্যে ইন্দ্রনিল বাবুর বিয়ে ঠিক হয়। আশীর্বাদে ইন্দ্রনিলকে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বর্ণের চেইন দেওয়া হয়। ইন্দ্রনিল নন্দী সেই স্বর্ণের চেইন মায়ের কাছে রাখতে দেয়।
কিন্তু বিয়ের দিন দেখা যায় সেই স্বর্ণের চেইনও চুরি হয়ে গেছে। যথারীতি ইন্দ্রনিল নন্দীর বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরও বাড়িতে ধারাবাহিক ভাবে চুরি হতে থাকে। এতে ইন্দ্রনীল নন্দী ও ওনার সধর্মিণীর সন্দেহ হয় যমুনা ভট্টাচার্যকে। তারপর ইন্দ্রনীল নন্দী একটি মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড দিয়ে মোবাইলটি ঘরে রেখে কর্মস্থলে চলে যান। ইন্দ্রনীল নন্দীর মাও যমুনার উপর নজর রাখতে থাকে। এরই মধ্যে ইন্দ্রনীল নন্দীর মা লক্ষ্য করেন যমুনা ঘরের আলমারি খুলে নগদ অর্থ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। ইন্দ্রনীল নন্দীর মা হাতেনাতে ধরার পরও যমুনা টাকা চুরির কথা অস্বীকার করে। এইদিকে ইন্দ্রনীল নন্দীর মোবাইলেও টাকা চুরির ঘটনা ক্যামেরা বন্দি হয়। কর্মস্থল থেকে যথারীতি বাড়িতে ফিরে এসে গোটা ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ইন্দ্রনীল নন্দী শনিবার এনসিসি থানায় যমুনা ভট্টাচার্য-র নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
এনসিসি থানার ওসি জানান থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ যমুনা ভট্টাচার্যকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত যমুনা ভট্টাচার্যর স্বীকারোক্তি মূলে উদ্ধার করা হয় চুরি যাওয়া একটি স্বর্ণের চেইন, দুই জোরা কানের দুল, একটি ল্যাপটপ ও নগদ ২৪ হাজার ৫৬৫ টাকা। এনসিসি থানার পুলিশ রবিবার ধৃত যমুনা ভট্টাচার্যকে আদালতে সোপর্দ করে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাটি অভয়নগর এলাকার চাঞ্চল্য বিরাজ করছে।