আগরতলা, ১৭ জানুয়ারি।। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা জনগণের সমস্যা সমাধানে আন্তরিক। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে তিনি মানুষের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার নজির স্থাপন করেছেন। আজও মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচির ২৬তম পর্বে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার প্রত্যাশী মানুষ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সাথে সাক্ষাৎ করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে আজও দীর্ঘক্ষণ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনগণের নানাবিধ সমস্যার কথা শুনেন। এদের মধ্যে অধিকাংশই চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে এসেছিলেন। তাৎক্ষণিক সহায়তার পাশাপাশি প্রত্যেকের সমস্যা নিরসনে মুখ্যমন্ত্রী আন্তরিকভাবে উদ্যোগ নেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ রামনগর কালিকাপুরের বাসিন্দা গাড়ি চালক রামপদ সূত্রধর তার আই টি আই কলেজ পড়ুয়া ছেলে শুভম সূত্রধরের চিকিৎসায় সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। শুভম কিডনিজনিত রোগে ভুগছেন। সপ্তাহে দু’বার তার ডায়ালায়সিসের প্রয়োজন হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার পরামর্শ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী জিবি হাসপাতালের সুপারকে শুভমের কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্তরকমের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। তাছাড়াও বাধারঘাটের অনুরিক্তা সেন, নরসিংগড়ের মঞ্জু সাহা, জগন্নাথ বাড়ি সংলগ্ন এলাকার নেপাল চন্দ্র শীল, কৃষ্ণনগর পুরাতন কালীবাড়ি লেনের জেমসন দেববর্মা, শিবনগর কলেজ রোডের সান্তলোক পাল, শান্তিরবাজার লাউগাঙের বিপ্লব দাসের মতো আরও অনেকেই পেয়েছেন চিকিৎসা পরিষেবায় সাহায্যের আশ্বাস।
মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজ ফটিকরায় বাজার এলাকার বাসিন্দা অটোরিক্সা চালক শ্যামসুন্দর বণিক ও তার স্ত্রী তাদের ১০ বছরের দিব্যাঙ্গ পুত্র সন্তান শুভজিৎ বণিকের চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সাহায্যের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেন। শ্যামসুন্দর বণিক তার ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ঋণের বোঝায় অসহায় হয়ে পড়েছেন জেনে মুখ্যমন্ত্রী শুভজিতের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সহায়তার পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তর থেকে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।
উত্তর ত্রিপুরার যুবরাজনগরের চারুপাশার মানিক দেবনাথ তার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। কলেজ পড়ুয়া মানিক দেবনাথ মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন প্রতিমাসে তার পায়ের অসুস্থতার জন্য দু’টি করে ইঞ্জেকশন দিতে হয়। কিন্তু পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ব্যয়বহুল ইঞ্জেকশনটি বর্তমানে তিনি নিতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মানিক দেবনাথের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজপত্রগুলি দেখে তার চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জিবি হাসপাতালের সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন।
পাশাপাশি সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিবের সাথে কথা বলে দিব্যাঙ্গ ভাতা দেওয়ার বিষয়েও তাকে আশ্বস্ত করেন। লেফুঙ্গার অজয় দেব চোখের সমস্যা সহ বিভিন্ন শারীরিক রোগে ভুগছেন। রোগাক্রান্ত অজয় দেব আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সংসার প্রতিপালন ও চিকিৎসা খরচ চালাতে সমস্যার মুখে পড়েছেন জেনে মুখ্যমন্ত্রী অজয় দেবকে ডি ডি আর সি’তে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে বলেন।
আজ মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী, অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ডাঃ শিরমনি দেববর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।