অনলাইন, ২৭ ডিসেম্বর।। পূর্ব ইউক্রেনের মূল শহর মারিঙ্কা দখল করার দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। তিনি বলেছেন, তার সৈন্যরা রাশিয়ার দখলে থাকা আঞ্চলিক রাজধানী ডোনেটস্কের ঠিক বাইরে “শক্তিশালীভাবে সুরক্ষিত” এলাকা দখল করেছে। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার ভ্যালেরি জালুঝনি বলেছেন, ইউক্রেনীয় বাহিনী মারিঙ্কার উপকণ্ঠে চলে গেছে। বিবিসি জানায়, মারিঙ্কা – ডোনেটস্কের প্রবেশদ্বার প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে জানিয়েছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ার ফিওডোসিয়া বন্দরে ইউক্রেনের হামলায় তাদের একটি যুদ্ধজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর প্রধান বলেছেন, যুদ্ধবিমানগুলো মঙ্গলবার ভোররাতে সেনা ও ভারী যন্ত্রপাতি সরানোর জন্য ব্যবহৃত ল্যান্ডিং জাহাজ নোভোচেরকাস্ক ধ্বংস করেছে। শোইগু মঙ্গলবার রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জাহাজের ক্ষতির বিশদ বিবরণ জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাশিয়ান বাহিনী ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ থামিয়ে দিয়েছে এবং এখন সব ফ্রন্টে এগিয়ে যাচ্ছে।
একদিন আগে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে পুতিনকে বলতে শোনা যায়, “দক্ষিণ গোষ্ঠীর আক্রমণকারী দলগুলি আজকে ডোনেটস্কের পাঁচ কিলোমিটার [তিন মাইল] দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত মারিঙ্কার বসতিকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করেছে৷ মারিঙ্কায় একসময় ১০ হাজার মানুষের বাসস্থান ছিল, পূর্ব ইউক্রেনে ক্রেমলিনের যুদ্ধে এ অঞ্চলটি ইউক্রেনের হাতে রয়ে যায়। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল ও সংযুক্ত করেছিল। সে সময় ডোনেটস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করেছিল। ২০২২ সালে যখন পূর্ণ মাত্রায় রাশিয়া আক্রমণ শুরু করে তখন মারিঙ্কা রাশিয়ান আক্রমণের অধীনে আসে।
শোইগু বলেন, “নয় বছর ধরে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী একটি শক্তিশালী সুরক্ষিত এলাকা তৈরি করেছে, যা ভূগর্ভস্থ পথ দিয়ে সংযুক্ত। এই দুর্গযুক্ত এলাকা এখন ফাটল ধরেছে। পুতিন এটাকে “সাফল্য” হিসাবে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যদের এখন ডোনেটস্ক থেকে আরও দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তারা মারিঙ্কা থেকে নিয়মিত গোলাবর্ষণ করেছে। ক্রেমলিন নেতা আরও বলেন, রুশ বাহিনীর কাছে এখন দোনেৎস্ক অঞ্চলে “বিস্তৃত অপারেশনাল এলাকায় যাওয়ার সুযোগ” রয়েছে।
সোমবার ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রুশ দাবি অস্বীকার করেছে। ইউক্রেনীয় সামরিক ব্লগাররা রিপোর্ট করেছেন, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা পশ্চিম মারিঙ্কার একটি ছোট এলাকায় অবস্থান করছে। তবে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার ভ্যালেরি জালুঝনি নিশ্চিত করেছেন যে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। জালুঝনি বলেন, শহরটি ধ্বংস হয়ে গেছে: “মারিঙ্কা আর নেই।” ২০১৪ সাল থেকে ইউক্রেন শহরটিকে প্রতিরক্ষামূলক বাধা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।