অনলাইন ডেস্ক, ২৫ ডিসেম্বর।। যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে দিন দিন বাড়ছে সহিংসতা। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকজন, শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে সংঘাত। দেশটিতে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে চলা লড়াই এর কারণে কার্যত ধ্বংস হয়ে গেছে রাজধানী খার্তুম। এ লড়াইয়ের কারণেই শুরু হয়েছে জাতিগত হামলা এবং গৃহযুদ্ধ।
এসব পরিস্থিতি সুদানকে দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের মধ্যে ঠেলে দিয়ে ওই অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তোলার হুমকি তৈরি করছে। এমন অবস্থায় আক্রমণ, জিনিসপত্র লুটের ভয় ও নারীরা যৌন সহিংসতার শিকার হতে পারে এই ঝুঁকির কারণে অস্ত্র হাতে তুলে নিচ্ছে বেসামরিকরাও। বিশেষ করে সুদানি তরুণরা সেনাবাহিনীর সাথে লড়াই করার জন্য, তাদের শহর রক্ষা করার জন্য অস্ত্র ধরছে, যা জাতিগত সংঘাত আরও গভীর হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গত এপ্রিলে শুরু হওয়া সেনাবাহিনী ও আরএসএফের চলমান সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে স্থানীয় তরুণরাও। যুদ্ধের জন্য স্থানীয় তরুণদের নিজ দলে তালিকাভুক্ত করছে দল দুটি। এতে করে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। এমনকি প্রায়শ সংঘাতের কারণে প্রাণ হারাচ্ছে শত শত তরুণ। আল জাজিরা জানায়, আরএসএফ-এর বিরুদ্ধে লড়তে সুদানের সেনাবাহিনী এবং সহযোগী গোষ্ঠীগুলি সামরিক প্রশিক্ষণ নেই এমন যুবকদের উপর নির্ভর করছে। রাজ্য জুড়ে নিয়োগ বাড়িয়েছে সেনাবাহিনী।
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ জানায়, দেশটিতে ৭০ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আর ১৫ লাখ মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।গত সপ্তাহে সুদানের ওয়াদ মাদানি আধা সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর থেকে অস্ত্র তুলে নিচ্ছেন বেসামরিকরাও। তাদের ধারণা সেনাবাহিনী এখন তাদের রক্ষা করতে পারবে না।
সুলেমান আল-সাদিগ নামে এক আইনজীবী আল জাজিরাকে জানান, ‘সশস্ত্র হওয়ার আহ্বান সেনাবাহিনী থেকে আসছে না। বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক নিজেরাই ইচ্ছাকৃত অস্ত্র যোগার করছে।” যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বেসামরিকদের মধ্যে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়ার মত পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
গত এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাত এখন দেশটিতে গৃহযুদ্ধের রূপ নিয়েছে। চলমান সংঘাতে ১২ হাজারের বেশি প্রাণহানি ও ৭০ লাখের মত লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছেন।নয় মাসের লড়াইয়ে কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশে খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু দুই পক্ষের লড়াই থামছে না।