আগরতলা, ১৯ ডিসেম্বর।। ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নয়নের পথে দ্রুততার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিকূলতা থাকা সত্বেও ত্রিপুরা বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় কাজ করছে। আজ সচিবালয়ে নীতি আয়োগের প্রতিনিধি দলের সাথে রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এক বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত একথা বলেন। নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বতের নেতৃত্বে সাত সদস্যের এক প্রতিনিধিদল আজ রাজ্যে এসে পৌঁছেছেন। প্রতিনিধিদলটি সচিবালয়ে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা সহ রাজ্য প্রশাসনের প্রধান সচিব, সচিব ও আধিকারিকদের সাথে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন।
বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভি কে সরস্বত বলেন, উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণে রাজ্যকে যেসব প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তা দ্রুত নিরসনে নীতি আয়োগ সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। রাজ্যের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলির বিকাশের পাশাপাশি রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। বিনিয়োগকারীদের রাজ্যে বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের উপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। এজন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে তিনি রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, নীতি আয়োগের এই প্রতিনিধিদলটি আজ তিনদিনের সফরে রাজ্যে এসেছেন। প্রতিনিধিদলটির রাজ্য সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সুসংহত ও স্থিতিশীল উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যৌথ উদ্যোগকে শক্তিশালী করা। বৈঠকে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভিকে সরস্বত ছাড়াও প্রতিনিধিদলে ছিলেন নীতি আয়োগের সিনিয়র এডভাইজার রাজীব কুমার সেন, ডেপুটি সেক্রেটারি হেমন্ত কুমার মিনা, সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট কৃষণ কান্ত শর্মা, অটল ইনোভেশন মিশনের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর হিমাংশু যোশি, স্টেট সাপোর্ট মিশনের স্পেশালিস্ট ড. অমৃত পাল কর, ইন্ডাস্ট্রি ভার্টিক্যালের সিনিয়র স্পেশালিস্ট রূপেশ সিং।
বৈঠকে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিকাশে নীতি আয়োগ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিভিন্ন সমস্যা সমাধানেও নীতি আয়োগ সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করছে। রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে গুড গভর্নেন্স দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে সচিবালয় থেকে শুরু করে জেলা কার্যালয়গুলির কাজকর্ম পেপারলেস করা হয়েছে। রাজ্যে ই- ক্যাবিনেট ব্যবস্থাও চালু হয়েছে। সরকার রাজ্যে ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সম্ভাব্য সব রকম ব্যবস্থা সম্প্রসারণের উপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। এতে কাজে স্বচ্ছতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈঠকে পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদলকে রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান, জনসংখ্যা, স্বাক্ষরতা, অর্থনীতি, মাথা পিছু গড় আয়, প্রবৃদ্ধির হার, স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্যের প্রগতি ও নীতি আয়োগের পরিকল্পনার সাথে সম্পৃক্ত রাজ্যের বিষয়গুলি নিয়ে অবহিত করেন।
নীতি আয়োগের প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠকে বাংলাদেশের সাথে ও বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে বাণিজ্যের প্রসার, শিল্প উন্নয়ন, বাঁশ, রাবার, আগর ও আনারসের প্রক্রিয়াকরণ, তথ্য ও প্রযুক্তিগত সুবিধা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের বিষয়গুলি প্রাধান্য পেয়েছে। তাছাড়াও বৈঠকে পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে ফিনিশড রাবার রপ্তানি করার ক্ষেত্রে বন্দর ভিত্তিক যে নিষেযাজ্ঞা রয়েছে তা প্রত্যাহারের জন্য নীতি আয়োগের সহযোগিতা চেয়েছেন। বৈঠকে রাজ্যের চা শিল্পের উন্নয়নে একটি অকশন সেন্টার খোলার বিষয়টিও প্রাধান্য পেয়েছে। তাছাড়াও রাজ্যের রাবারের গুণমান বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় স্মোক হাউস গড়ে তোলার বিষয়েও গুরুত্ব আরোপ করা হয়।