স্টাফ রিপোর্টার, গন্ডাছড়া, ৩০ অক্টোবর।। ধলাই জেলার গন্ডাছড়া মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। বেশ কয়েকজন গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মানুষ বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে প্রয়োজনীয় তেমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ত্রিপুরা ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তালিকাতেও ত্রিপুরা ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকা হিসেবে গত কয়েক বছর ধরেই চিহ্নিত রয়েছে। তার সুবাদেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধিদল প্রতিবছর ত্রিপুরার ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকাগুলি সফল করে থাকেন। অথচ রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ত্রিপুরার ম্যালেরিয়া প্রবণ এলাকাগুলিতে নিয়মিত চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করছে না বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠে এসেছে। স্বাস্থ্য দপ্তর স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী সহ ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের কাজে নিয়োজিত অন্যান্য কর্মীদের নিয়মিত নজরদারি রাখার নির্দেশ দিলেও এক্ষেত্রে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে।
প্রতিবছর ডিডিটি ছড়ানোর মধ্য দিয়ে ম্যালেরিয়া দূরীকরণের যে উদ্যোগ রয়েছে তাতেও নানা গাফিলতি ও ঘাটতি রয়েছে বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে এবছর মশারির বিতরণ কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে। বিশেষ করে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে জনজাতি অংশের জনগণ ম্যালেরিয়ায় মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন।
জানা গেছে জগবন্ধু পাড়ার বেশ কিছু সংখ্যক লোকজন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। মৃতার পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ালেন ধলাই জেলার এডিএম, ইএম রাজেশ ত্রিপুরা এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঘটনা জগবন্ধু পাড়ার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মোহিনী পাড়ায়। একই পরিবারের চারজন ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে জগবন্ধু পাড়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে তিনজনের ম্যালেরিয়া পিএফ পাওয়া যায়। তার মধ্যে ১২ বছরের নাবালিকা কন্যা তুলসী রানী ত্রিপুরা ২৭ তারিখ শনিবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢ়লে পড়ে। ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আছেন ধলাই জেলার এডিএম। কিন্তু চিকিৎসক কাসলাং দেববর্মা তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এখনো পর্যন্ত ৭ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার মধ্যে ৬ জনই ম্যালেরিয়া পজেটিভ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছয়জনের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।