দুর্গাপূজার জন্য চাঁদার জুলুম, গাড়ি ভাঙচুর, প্রতিবাদে কৈলাসহরে সড়ক অবরোধ

স্টাফ রিপোর্টার, কৈলাসহর, ৪ অক্টোবর।। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পূজোকে কেন্দ্র করে দিকে দিকে শুরু হয়েছে চাঁদার জুলুমবাজি। ইতিমধ্যেই এই জুলুমবাজি চরম আকার ধারণ করেছে বিভিন্ন জায়গায়। পূজোর আর মাত্র হাতে গুনা কয়েকটা দিন বাকি এরই মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাক আটক করে চাঁদার জুলুম চরম আকার ধারণ করায় পথ অবরোধে বসেন পণ্যবাহী গাড়ির চালক সহ শ্রমিকরা। বুধবার কৈলাসহরের এয়ারপোর্ট রোড সংলগ্ন কৈলাসহর-ধর্মনগর ও কৈলাসহর-কুমারঘাট সড়ক অবরোধ করে ট্রাক চালকরা।

সকাল সাতটা থেকে ট্রাক চালকরা অবরোধে বসেন। তাদের কাছ থেকে অবরোধের কারণ জানতে চাইলে এক ট্রাক চালক বলেন, পূজোর চাঁদার জন্য জুলুমবাজি, গাড়ি ভাঙচুর ও চালকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হচ্ছে। প্রত্যেক গাড়ি থেকে চার- পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হচ্ছে। এত পরিমাণ টাকা চালকরা কোথা থেকে দেবেন। ট্রাক চালকরা বলেন তাদের একটাই সম্পদ কৈলাসহর সীমান্ত। যেখান থেকে তারা বাংলাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন জিনিস ট্রাকে করে রাজ্য সহ বহিঃরাজ্যে নিয়ে যান।

আগে প্রত্যেক দিন ৩০ থেকে ৩৫ গাড়ি মাল তোলা যেত। পূজোর চাঁদার জুলুমে আগরতলা ও করিমগঞ্জের ব্যবসায়ীরা চলে গেছে। এখন চার থেকে পাঁচ গাড়ি মাল তোলা সম্ভব। সামনে এত বড় একটা উৎসব দুর্গপূজো। কিভাবে আমরা এ উৎসব পালন করব। আমরা চোখে পথ দেখছি না। আমাদের চোখের সামনে সব অন্ধকার। শ্রমিক, চালক, সহচালক, মালিক মিলিয়ে প্রায় দেড়শ পরিবার এই কাজের সাথে যুক্ত। এভাবে যদি মাল না আসে তাহলে এই দেড়শ পরিবারের পেটে টান পড়বে। বিশেষ করে কমলপুর ও কদমতলা এলাকার ক্লাবের সদস্যরা ট্রাক চালকদের মারধর করছে।

তিন চার দিন পূর্বে কদমতলায় একটি ট্রাক ভাঙচুর করা হয়। চালকের মানিব্যাগ সহ ড্রাইভিং লাইসেন্স, আধার কার্ড, আই কার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ধরনের ঘটনা চার পাঁচ দিন পূর্বে কমলপুর ঘটেছে। কমলপুর থানা ও কদমতলা থানায় চালজরা মামলা করতে গেলে থানা মামলাও রাখছে না। সেখানে প্রশাসন ট্রাক চালকদের পাত্তাই দিচ্ছে না। ট্রাক চালকদের বাড়ি কৈলাসহর তাই বাধ্য হয়ে আজ কৈলাসহরে পথ অবরোধ বসেছে।

চার পাঁচ দিন পূর্বে কৈলাসহর থেকে আগরতলা যাওয়ার পথে এক ট্রাক চালককে মারধর করা হয়। পাঁচটি মাছের কার্টুন ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা। মালিকরা এখন ট্রাক আটকে রেখেছে চালকদের চালানোর জন্য দিচ্ছে না। মালিকরা ভাবছেন চালক চুরি করেছে অথচ ক্লাব নিয়েছে মাছের কার্টুনগুলো। ট্রাক চালকরা এখন বিচার চাইছে। এভাবে চলতে থাকলে কৈলাসহর সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলে দেড়শ পরিবারের পেটে টান পড়বে। তারা বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে নিতে চাইছেন। সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ পুলিশ ও শাসকদলের প্রতিনিধিদের আশ্বাসে অবরোধ মুক্ত হয়। অবরোধের ফলে বিভিন্ন যানচালক সহ হাজারের অধিক যাত্রীদের রাস্তার দু’ধারে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?