আন্তর্জাতিকস্তরে গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় রাজ্যে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে : বিদ্যুৎমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৬ সেপ্টেম্বর।। আন্তর্জাতিকস্তরে গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় রাজ্যে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে। রেগুলারিটি কমিশন সংশ্লিষ্ট সব মহলের সাথে কথা বলে এবং যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনা করেই ৭ শতাংশ বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ সন্ধ্যায় সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ এই সংবাদ জানিয়েছেন।

বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, গোপনে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করার কোনও সুযোগ নেই। এজন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। মূলত সারা দেশেই বিভিন্ন রাজ্যে বিদ্যুৎ মাশুল নির্ধারণ করে থাকে রেগুলারিটি কমিশন। রাজ্যে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত নেওয়ার উদ্দেশ্যে পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা ইলেক্ট্রিসিটি কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন, আইএলএস হাসপাতাল, ড. বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতাল সহ ৬টি সংস্থা রেগুলারিটি কমিশনের কাছে আপত্তি জানিয়েছিল। এরপর স্টেট অ্যাডভাইজরি কমিটির শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে রেগুলারিটি কমিশন বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বা ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমের কোনও হাত নেই।

সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, রাজ্যে ২০০৫ সালে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম গঠিত হয়। এরপর ২০০৬ সালে রেগুলারিটি কমিশন বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করে। পরে ২০১০-১১ সালে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি হয় ৪৬.০৯ শতাংশ। ২০১২-১৩ সালে বৃদ্ধি পায় ৭.৭৫ শতাংশ। ২০১৩-১৪ সালে বৃদ্ধি পায় ৪০.৪৫ শতাংশ এবং ২০১৪-১৫ সালে বৃদ্ধি পায় ৫.৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ বিগত সরকারের সময়ে ২০০৬-০৭ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষে মোট ১৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি পায়। বর্তমান সরকারের সময়কালে বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে মাত্র ৭ শতাংশ।

সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, বিদ্যুৎ মাশুল ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও যারা ১৫ দিনের মধ্যেই বিদ্যুৎ বিল প্রদান করবে তারা মোট বিদ্যুৎ বিলের উপর ৫ শতাংশ ছাড় পাবেন। এক্ষেত্রে চা বাগানগুলি ১৫ শতাংশ ছাড় পাবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নে রাজ্য সরকার ত্রিপুরা পাওয়ার ট্রান্সপোর্ট রেগুলারিটি নামে একটি নতুন শাখা চালু করেছে। এই শাখা মূলত ৩৩ কেভি সাব স্টেশন স্থাপন, পাওয়ার কাট, বিভিন্ন সাব স্টেশনের মেরামতি, লোক নিয়োগ, গ্রাহক পরিষেবা ইত্যাদি বিষয়ে কাজ করবে।

বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, রাজ্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ দপ্তর বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, আরডিএসএস ইত্যাদির অর্থানুকূল্যে বিভিন্ন কাজ হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন, ১৩২ কেভি, ৩৩ কেভি সাবস্টেশন স্থাপন, আন্ডার গ্রাউন্ড ক্যাবল বসানো, কভার কন্ডাক্টর ক্যাবেল সংযোগ, পুরোনো বিদ্যুৎ লাইনগুলি পরিবর্তন করা। সাংবাদিক সম্মেলনে বিদ্যুৎ নিগমের ডিরেক্টর (ফিনান্স) সর্ভজিৎ সিং ডোগরা, জেনারেল ম্যানেজার (ট্রান্সমিশন) রঞ্জন দেববর্মা এবং ডিজিএম (কমার্শিয়াল) সুজাতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?