স্টাফ রিপোর্টার, বিশালগড়, ১২ সেপ্টেম্বর।। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই ছাত্রছাত্রীদের মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শিক্ষাদান ও তাদের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য শিক্ষার্থীদের মনের গভীরে রেখাপাত তৈরী করে। যা ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে সুগম করে। শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মঙ্গলবার সেকেরকোট উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব ও প্রাক্তণীদের মিলন মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা একথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে। প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পেছনে যাদের অবদান ছিল তাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানো উচিত। ইতিহাসকে ভিত্তি করে ভবিষ্যতের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, খেলাধুলা এবং পড়াশুনা সমানভাবে চললেই ভবিষ্যতে ছাত্রছাত্রীরা সুনাগরিক হিসাবে গড়ে উঠবে। যেকোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষা শুরু হয় তার ঘর থেকেই। মা হচ্ছেন ঘরের প্রথম শিক্ষক। আর বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দেখে রাখার দায়িত্ব শিক্ষক-শিক্ষিকামন্ডলীর। পাশাপাশি ছেলেমেয়েরা যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছেন কি না তা লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব অভিভাবকদের।
তিনি বলেন, পড়াশোনার পদ্ধতি এবং বিষয় সমূহ সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গতানুগতিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষার সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলিকেও বিদ্যালয়ের পাঠদানে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় চালু হওয়া নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতির উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যেও এই শিক্ষানীতি পর্যায়ক্রমে কার্যকর করা হচ্ছে। এরফলে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ অনেকটাই কমবে।
তিনি বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের প্রতিভার অভাব নেই। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য এবং শিক্ষায় সর্বোত্তম ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে রাজ্য সরকার এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করা থেকে শুরু করে ‘বিদ্যাজ্যোতি’ প্রকল্প চালু, বিদ্যালয়গুলির পরীক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন, বছর বাচাও প্রকল্প চালু, কেন্দ্রীয়ভাবে প্রশ্নপত্র তৈরী, বন্দে ত্রিপুরা নামে শিক্ষামূলক চ্যানেল চালু করেছে। এছাড়াও নবম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের বিজ্ঞান মনস্কতা বৃদ্ধিতে রাজ্য সরকার ‘ত্রিপুরা সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ এবং ‘ম্যাথ ট্যালেন্ট সার্চ এগজামিনেশন’ চালু করেছে। প্রতি বছর রাজ্য সরকার ৩০ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে জেইই/এনইইটি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য জাতীয় মানের প্রতিষ্ঠানে কোচিং নেওয়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। তিনি জানান, ৪টি নতুন ডিস্ট্রিক্ট ইনস্টিটিউট অব ট্রেনিং এবং, ১টি বিটিটিই স্থাপন করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষক প্রশিক্ষণের প্রতিষ্ঠানগুলির পরিকাঠামো এবং এসসিইআরটি-এর পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে। ককবরক, মণিপুরী, চাকমা, হালাম, মগ ইত্যাদি ৮টি জনজাতি ভাষায় পাঠ্যবই বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে। কলেজস্তর পর্যন্ত ছাত্রীদের টিউশন ফি মুকুব করা হয়েছে। নবম শ্রেণীতে পাঠরত প্রায় ১ লক্ষ ছাত্রীকে বিনামূল্যে সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। “নিপুন ত্রিপুরা’ প্রকল্পে ৩য় শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মৌলিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। প্রথম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য তিন মাস মেয়াদী ‘বিদ্যা সেতু” মডিউল তৈরি করা হয়েছে।