স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৫ আগস্ট।। ধর্ষণের দায়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মী উত্তম কুমার দেববর্মাকে দোষী সাব্যস্ত করলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ তথা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টর বিচারক সুনীল কুমার সিং। মামলার বিবরণে প্রকাশ, অভিযোগকারী মহিলা ও অভিযুক্ত উত্তম কুমার দেববর্মা উপজাতিভিত্তিক একটি রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তা। এই সুবাদে তাদের মধ্যে পরিচিতি হয়। এই পরিচিতির সুবাদে উত্তম কুমার দেববর্মা প্রায়ই মহিলার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। ঘটনার রাতেও অর্থাৎ ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট উত্তম কুমার দেববর্মা বোধজংনগর থানাধীন সেই মহিলার বাড়িতে যান এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য সেই রাতে মহিলার বাড়িতে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মহিলাও সরল মনে রাজি হয়ে যান।
রাতে মহিলা তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির একটি ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন ভেতর থেকে দরজা আটকে। আরেক কক্ষে ঘুমান উত্তম কুমার দেববর্মা। কিন্তু মাঝ রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতির অছিলায় উত্তম কুমার দেববর্মা মহিলাকে ডাকেন এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এই কথা শুনে মহিলাও তড়িঘড়ি তার রুমের দরজা খুলে উত্তম দেববর্মার রুমে যান এবং তার চোখে মুখে জল দিয়ে প্রাথমিক সুশ্রুশা প্রদানের চেষ্টা করেন। সেই সময়েই সুযোগ বুঝে উত্তম দেববর্মা মহিলাকে ঝাপ্টে ধরে এবং ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।
পাশের রুমে মহিলার কিশোরি কন্যা ঘুমাচ্ছিল। তাই লজ্জা ও ভয়ে মহিলা চিৎকার পর্যন্ত করতে পারেননি। মহিলার দুর্বলতার সুযোগে এটিএম কার্ডও ছিনিয়ে নেয় উত্তম কুমার দেববর্মা এবং ঘটনা কাউকে বললে মহিলাসহ মেয়েকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। প্রাথমিকভাবে মহিলা সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু না জানালেও পরবর্তী সময়ে মনে শক্তি সঞ্চয় করে বোধজংনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগমুলে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দেয় এবং ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর আদালত উত্তম কুমার দেববর্মার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে। আই পি সি ‘র ৩৭৬(i)ও ৩৭৯ ধারায় উত্তম দেববর্মার বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হয়। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৬ জন সাক্ষীর বয়ানের উপর নির্ভর করে ট্রায়াল কোর্ট আজ উত্তম দেববর্মাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। সোমবার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।