অনলাইন ডেস্ক, ২৯ জুলাই।। বেশীরভাগ মানুষই সারাবছর খুশকির সমস্যায় ভুগেন। মানুষের শরীরে অনেকগুলো সমস্যার মধ্যে এটাও একটা সমস্যা। খুশকির কারণে মাথার চুল পরা বৃদ্ধি পায়।
খুশকি কি
খুশকি মূলত এক ধরনের মৃত কোষ অথবা মরা চামড়া, যার কারণে ত্বকে বিভিন্ন সংক্রমণ দেখা দেয়, যেমন ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ ও ব্রণ। এর ইংরেজি নাম সেবোরেক ডারমাটাইটিস। মাথার ত্বকে ম্যালাসেজিয়া নামক এক ধরনের ছত্রাক অথবা ইস্টের সংক্রমণ বেশি হলে অথবা অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হলে মাথায় মৃত কোষ বেড়ে খুশকি হয়।
খুশকি কেন হয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, খুশকি হওয়ার মূল কারণ হলো ফাঙ্গাল ইনফেকশন। ম্যালাসেজিয়া নামক একটি ফাঙ্গাসের কারণেই মূলত খুশকি হয়। এছাড়া স্ক্যাল্পে কোনো গুরুতর সমস্যার কারণেও খুশকি হতে পারে। আবার একজনের চিরুনি অন্যজন শেয়ার করা বা নিয়মিত চুল পরিষ্কার না রাখলেও খুশকি হয়। এছাড়া মাথার ত্বকে ঘাম জমার কারণেও খুশকির সমস্যা বেড়ে যায়।
চুলের প্রতি অযত্ন ও অবহেলা। নিয়মিত শ্যাম্পু করে স্ক্যাল্প পরিষ্কার না রাখলেও খুশকি বাড়ে।
খুশকি দূর করার ঘরোয়া উপায়
শরীরে জলের অভাব থাকলে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাই চুল এবং মাথার ত্বকের যত্ন নিতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করতে হবে।
প্রতিদিন চুলে শুধু শ্যাম্পু করলে হবে না, একদিন পর পর মাথায় তেল লাগাতে হবে। এ ছাড়া শ্যাম্পু ব্যবহারের পর অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
আপেল সিডার ভিনেগার একটি অ্যান্টিফাঙ্গাল, তাই ছত্রাকের বিরুদ্ধে দারুণ কার্যকর। তাই এটি মাথার ত্বক সুরক্ষিত রাখতে ও খুশকি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। এ ছাড়া আপেল সিডার ভিনেগারে থাকা অ্যাসিড মাথায় খুশকি তৈরিতে বাধা দেয়।
নিম পাতায় থাকা অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান খুশকি দূর করে। এর অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান স্ক্যাল্প ভালো রাখে।
অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে আমন্ড অয়েল মিশিয়ে চুলে লাগান। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে। এটি খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি ব্যাক্টেরিয়া-রোধী উপাদান সমৃদ্ধ এবং এটা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করে। তাই খুশকি কমাতে গ্রিন টি অনেক উপকারী।
রাতে এক টেবিল চামচ মেথি ও এক টেবিল চামচ মৌরি ভিজিয়ে রেখে পরদিন সেটার পেস্ট তৌরি করে গোসলের আগে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট চুলে লাগিয়ে রাখুন। খুশকি অনেকাংশেই দূর হবে।
খুশকি দূরীকরণে মধু ও লেবু বেশ কার্যকর। তিন টেবিল চামচ মধুর ভেতর কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে মাথার ত্বকে প্রয়োগ করলে খুশকি দূর হয়।
খুশকি দূর করতে পেঁয়াজের রস ও আদার রস বেশ কার্যকর। থেঁতলে রস বের করে তুলার সাহায্যে লাগাতে পারেন। আবার থেঁতলে নেওয়া অংশটুকু পাতলা কাপড়ে মুড়ে মাথার ত্বকে রস লাগাতে পারেন।
খুশকির প্রতিরোধ
খুশকিমুক্ত থাকার মূল শর্ত হলো পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা। তাই বাইরের ধুলোবালি যেনো মাথায় স্ক্যাল্পে না বসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে বাইরে বের হলে স্কার্ফ বা টুপি দিয়ে চুল ঢেকে নিতে হবে।
মাথার ত্বকে সংক্রমণ থাকলে চুলে কোনো রং ব্যবহার করা উচিত নয়।স্নানের পর চুল ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। প্রতিদিন মোটা দাঁতের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ান। খুশকি যেনো না হয় তার প্রথম শর্ত প্রচুর জল পান এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা। যেসব খাবারে ভিটামিন বি, জিংক, ওমেগা-৩ আছে, সেসব খাবার খেলে মাথার ত্বক ভালো থাকে।