স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৬ জুলাই।। সংবাদমাধ্যম হচ্ছে সমাজের দর্পন। সামাজিক পরিবর্তনে সংবাদপত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পাশাপাশি গণতন্ত্র রক্ষায় সংবাদমাধ্যম অতন্দ্র প্রহরী হিসেবেও কাজ করে। আজ আগরতলা প্রেস ক্লাবে ৪ দিনব্যাপী মিডিয়া ওয়ার্কশপ কাম ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে এবং আগরতলা প্রেস ক্লাবের সহযোগিতায় আয়োজিত ৪ দিনব্যাপী এই মিডিয়া ওয়ার্কশপে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং ওয়েব মিডিয়ার সাংবাদিকগণ অংশগ্রহণ করেছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হচ্ছে সংবাদমাধ্যম। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রয়োজন। তা না হলে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছাতে পারবে না।
রাজ্য সরকারও সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার শুরু থেকেই সংবাদপত্র বান্ধব। আর তা কথায় নয় কাজের মাধ্যমেই প্রতিফলন হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের কল্যাণে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই বহু পদক্ষেপ নিয়েছে। আগামী দিনেও এই প্রচেষ্টা জারি থাকবে। সরকারের ভুল-ত্রুটিগুলি সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরলে প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রেও সরকারের সুবিধা হয়। এক্ষেত্রে গঠনমূলক সংবাদ পরিবেশন রাজ্য সরকার কামনা করে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যেকোনও কাজের ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাতে কাজের উৎকর্ষতা বাড়ে। আর এটাকে ধরে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের যুগে সমতা বজায় রেখে চলাও প্রয়োজন। এ ধরণের কর্মশালা সাংবাদিকদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে উৎকর্ষতা আরও বৃদ্ধি করবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রযুক্তির উন্নতির যুগে এই ধরণের কর্মশালা খুবই প্রয়োজন।
বিভিন্ন ধরণের সংবাদ, ফিচার তৈরী করার ক্ষেত্রেও তা কাজে লাগতে পারে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন নীতি, নির্দেশিকা সঠিকভাবে জনগণের মধ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রেও সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রাজ্য সরকার সব সময়ই গঠনমূলক সংবাদ পরিবেশন আশা করে। সাংবাদিকদের আরও দক্ষতা বৃদ্ধিতে ২০১৯ সালে এধরণের কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ১৮০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেছিলেন।
শুধু তাই নয় সাংবাদিকদের কল্যাণে রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্প, পেনশন বৃদ্ধি, বীমা চালু, বিজ্ঞাপন প্রণয়ন নীতি সহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অনুষ্ঠানে আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক রমাকান্ত দে বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার সাংবাদিকদের কল্যাণে যথেষ্ট আন্তরিক। সাংবাদিকদের কল্যাণে রাজ্য সরকার বহু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাংবাদিকদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালুর উদ্যোগ।
স্বাগত ভাষণে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য বলেন, ৪ দিনব্যাপী এই কর্মশালায় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক এবং ওয়েব মিডিয়ার ৩০০ উপর সাংবাদিক অংশ নেবেন। সংবাদ জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ৮ জন রিসোর্স পার্সন কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দেবেন। উন্নত প্রযুক্তির যুগে সাংবাদিকদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই কর্মশালা কাজে লাগবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পিটিআই’র পূর্বাঞ্চলের এডিটর জয়ন্ত রায় চৌধুরী এবং আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য।