স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৬ জুন।। উৎসব মানেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল অংশের মানুষের মিলনক্ষেত্র। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী খার্চি উৎসবও তার ব্যতিক্রম নয়। চতুদর্শ দেবতাবাড়ির খার্চি উৎসব রাজ্যের জাতি-জনজাতি মানুষের এক মিলনতীর্থ। রাজ্যবাসী অপেক্ষা করে থাকেন এই উৎসবের জন্য। আজ সকালে চতুর্দশ দেবতা মন্দির প্রাঙ্গণে ৭ দিনব্যাপী খার্চি উৎসব ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ত্রিপুরার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির এক গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। রাজ্যের এই ঐতিহ্যবাহী বৃষ্টি ও সংস্কৃতি দেশের যেকোন রাজ্যের সংস্কৃতির তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। রাজ্যের জাতি-জনজাতির ঐতিহ্যবাহী মিশ্র সংস্কৃতিকে দেশের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং জনজাতি কল্যাণ দপ্তর নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরের মতো চতুর্দশ দেবতা মন্দিরেরও ট্রাস্ট গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিগতদিনে লক্ষ্য করা গেছে যে খার্চি উৎসব আয়োজনে সেরকম পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি।
বর্তমান রাজ্য সরকার চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন সহ বিভিন্ন বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। খার্চি মেলায় আগত পূণ্যার্থীদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে উৎসব কমিটি যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা প্রশংসনীয় বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন।অনুষ্ঠানে জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা বলেন, রাজ্যের জাতি-জনজাতি অংশের জনগণ নিজস্ব ধারায় ধর্ম, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির পরম্পরা পালন করে আসছে। রাজ্য সরকার সকল অংশের বৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশে উদ্যোগ নিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে খাটি উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক রতন চক্রবর্তী বলেন, ৭ দিন ধরে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীর আগমনে খার্চি উৎসব বর্তমানে মিলনতীর্থে পরিণত হয়েছে। এবারের খার্চি মেলায় দর্শনার্থীদের সুরক্ষায় সিসি টিভি, টিএসআর জওয়ান এবং সাদা পোষাকে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। ফলে এবছরের খাটি উৎসব অতীতের সব রেকর্ড ম্লান করে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
৭দিনব্যাপী খার্চি উৎসব ও প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধায়ক স্বপ্না দেববর্মা, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, পুরাতন আগরতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ শীল, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী ও অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা তপন দাস, জিরানীয়া মহকুমার মহকুমা শাসক শান্তিরঞ্জন চাকমা প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ বিভিন্ন দপ্তরের প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।