ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়াতে ও মেধার বিকাশে জাতীয় শিক্ষানীতি সহায়ক ভূমিকা নেবে : মুখ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৯ জুন।। রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়াতে ও মেধার বিকাশে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ সহায়ক ভূমিকা নেবে। পাশাপাশি জাতীয় শিক্ষানীতি – ২০২০ রূপায়ণের ফলে আগামীদিনে রাজ্যে গুণগত শিক্ষা আরও বৃদ্ধি পাবে। আজ আগরতলা টাউনহলে রাজ্যে জাতীয় শিক্ষানীতি – ২০২০ রূপায়ণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী প্রায় সময়ই বলে থাকেন যে, যাদের কাছে জ্ঞান থাকবে পুরো পৃথিবী তাদের হাতের মুঠোয় থাকবে। তাই দেশের পরম্পরা ও ঐতিহ্যের সাথে বিশ্বের সর্বোত্তম জ্ঞান ভান্ডারের সমন্বয় সাধন করেই কেন্দ্রীয় সরকার ৩৪ বছর পর নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাচীনকালে বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ভারতের নালন্দা, তক্ষশিলার মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে আসতো। প্রধানমন্ত্রী চাইছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে দেশের এই হাত গৌরব যাতে পুনরায় ফিরে আসে। তাই ভারতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বিশ্বমানের সর্বোত্তম শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যেই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে কর্ণাটক নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ বাস্তবায়ন করে। পরবর্তীতে মধ্যপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, আসাম সহ অন্যান্য রাজ্যেও এই জাতীয় শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করা হয়। আজ আমাদের রাজ্যেও প্রাথমিকভাবে উচ্চশিক্ষাস্তরে এই জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণ করা হচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০-তে অনার্স / রিসার্চ সহ ৪ বছরের ডিগ্রী কোর্স রয়েছে। এছাড়াও এই শিক্ষানীতিতে এক্সিট ও এন্ট্রান্সের সুবিধা রয়েছে। কোনও ছাত্র যদি মনে করে সে তার বর্তমান পাঠক্রম বাদ দিয়ে অন্য কোন বিষয়ে পড়াশুনা করবে তবে সে কলেজ থেকে বের হয়ে আসতে পারবে। তখন তাকে সার্টিফিকেট প্রদান করে মূল্যায়নও করবে সংশ্লিষ্ট কলেজ বা ইউনিভার্সিটিগুলো। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে গুণগতমানের শিক্ষা প্রদান সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিটি সফল রূপায়ণের লক্ষ্যে সঠিক গাইডলাইন অনুসরণ করার উপরও শিক্ষক-শিক্ষিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের মধ্যে প্রতিভার কোনো অভাব নেই।দেশের যেকোনো অংশের ছেলেমেদের তুলনায় রাজ্যের ছেলেমেয়েরা প্রতিভার দিক দিয়ে কোনো অংশে কম নয়। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০তে সমগ্র দেশের শিক্ষা পদ্ধতি এক হওয়ার ফলে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের জাতীয়স্তরে শিক্ষা গ্রহণে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় রয়েছে। সেগুলিকে কেন্দ্র করেই রাজ্যে এডুকেশন হাব তৈরী হচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি রাজ্যের জন্য ফলপ্রসূ হবে বলেই মুখ্যমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ আগের শিক্ষানীতি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে সঠিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করবে। ছাত্রছাত্রীদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ক্ষেত্রেও এই শিক্ষানীতি কাজে লাগবে। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিকে সঠিকভাবে রূপায়ণ করতে শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ সকলকে আন্তরিক ভূমিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানান শিক্ষা সচিব। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গঙ্গাপ্রসাদ প্রসাইন, মহারাজা বীর বিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর সত্যদেও পোদ্দার এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা।

You May Also Like

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

চ্যাট খুলুন
1
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠান
হেলো, 👋
natun.in আপনাকে কিভাবে সহায়তা করতে পারে?