স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ৭ জুন।। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে আজও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মানুষ মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সাথে সাক্ষাৎ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা জনসাধারণ তাদের বিভিন্ন সমস্যা, অভাব ও অভিযোগের কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। এদের মধ্যে সিংহভাগই এসেছেন চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি নিয়ে।
মুখ্যমন্ত্রী (ডা) সাহা তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র খতিয়ে দেখে সাথে সাথেই সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সারুম মনুবাজারের ধনমোহন ত্রিপুরা এসেছিলেন তার স্ত্রীর চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে। ধনমোহন ত্রিপুরার স্ত্রী বছর দু’য়েক ধরে হার্টের অসুখে ভুগছেন। হার্টের অপারেশন সহ উন্নত চিকিৎসার জন্য ধনমোহন ত্রিপুরার স্ত্রীকে বহিরাজ্যে রেফার করা হয়। কিন্তু দরিদ্র ধনমোহন ত্রিপুরার পক্ষে বহিরাজ্যে গিয়ে ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো খুবই কষ্টকর। তাই তার স্ত্রীর উন্নত চিকিৎসায় সহায়তার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রীর কাছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ধনমোহন ত্রিপুরার স্ত্রীর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ড. দেবাশিস বসুকে নির্দেশ দেন। তাছাড়া আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন কৈলাসহরের চন্ডীপুরের বাসিন্দা লিটন দাস। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। তার ১২ বছরের দিব্যাঙ্গ কন্যা সন্তান মৃগীরোগী। ব্যাঙ্গালোরে তার কন্যার উন্নত চিকিৎসার জন্য ১০-১২ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। তার মতো দিনমজুরের পক্ষে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মেটানো অসম্ভব। তার এই অক্ষমতার কথা আজ তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন।
মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথেই তার আবেদনে সাড়া দিয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন।খোয়াইয়ের মুঙ্গিয়াকামী নিবাসী গ্রহনাশান্তি মলসম তার স্বামীর চিকিৎসার সহায়তার আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেন। গ্রহনাশান্তির স্বামী গত ২ বছর ধরে আলসারে ভুগছেন। এরমধ্যে জিবি হাসপাতালে তার স্বামীর অপারেশনও করা হয়। গ্রহনাশান্তির স্বামী ছোট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও বর্তমানে অসুস্থতার কারণে তিনি এখন কর্মহীন। এমন অবস্থায় গ্রহনাশান্তি তার স্বামীর চিকিৎসার খরচ মেটাতে হিমসিম খাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রী তার সমস্যার কথা শুনে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিবকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এছাড়াও উদয়পুর নিবাসী কৃষ্ণ ঘোষও আজ মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। কৃষ্ণ ঘোষ ছোটবেলায় শিশুনন্দন অনাথালয় থেকে পড়াশুনা করেন। বর্তমানে তার একটি ছোট দোকান আছে। কিন্তু ২০২১ সালে তিনি ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তার শরীরের বাম অংশ সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে যায়।
বর্তমানে তার ওষুধ কেনার জন্য প্রতিমাসে ৪,২০০ টাকা প্রয়োজন। এই অবস্থায় তিনি তার চিকিৎসার খরচ চালানোর অক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথেই তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ড. দেবাশিস বসু, সংখ্যালঘু কল্যাণ দপ্তরের সচিব তাপস রায় সহ স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্যান্য আধিকারিকগণ।