স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৮ মার্চ।। অন্তর্গত শ্রীশ্রীচণ্ডী গ্রন্থে বাসন্তী পূজার দুর্গাদেবী দুর্গাপূজার আখ্যায়িত নিম্নরূপ— সত্য যুগে দ্বিতীয় মনু স্বরোচিষের অধিকার কালে সুরথ চন্দ্রবংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি সসাগরা পৃথিবীর রাজা হয়েছিলেন। কিন্তু কাল বশে তিনি শত্রুগণ কর্তৃক পরাজিত হয়ে, রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন।
মনের দুঃখে এক গভীর বনে প্রবেশ করে বিপ্র শ্রেষ্ঠ মেধস মুনির আশ্রমে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে মেধস মুনির উপদেশে।
বন মধ্যস্থিত নদীর তীরে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে তিন বছরকাল উপবাস থেকে তন্মস্ক হয়ে ফুল-ফল, ধূপ-দীপ ও অগ্নি (হোম) দিয়ে দেবীর পূজা সাঙ্গ করলে, দেবী দুর্গা-চণ্ডীকা সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের বর প্রদান করেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধ হয়। রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি শ্রীশ্রীচণ্ডী স্বরূপা দুর্গাদেবীকে দর্শন এবং সকল প্রকার ভোগান্তি থেকে মুক্ত হন।দেবী দুর্গার প্রথম পুজোরী হিসাবে চণ্ডীতে রাজা সুরথের উল্লেখ রয়েছে।
সুরথ সুশাসক ও যোদ্ধা হিসেবে বেশ খ্যাত ছিলেন। মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৮১ থেকে ৯৩ অধ্যায় পর্যন্ত ত্রয়োদশ অধ্যায়ের নামই চণ্ডী।এই পূজারই অষ্টমী তিথিতে অন্নপূর্ণা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়। অন্নপূর্ণাদেবী স্বয়ং দুর্গা, সুতরাং একই গৃহে একই দেবীর পৃথক আবাহন যুক্তি যুক্ত নহে।
সেইজন্য যাঁরা অন্নপূর্ণা দেবীর পুজা করেন, তাঁরা আর বাসন্তী পূজার ব্যবস্থা করেন না এবং অন্নপূর্ণা দেবীর পূজার ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত ব্যাপক ভাবেই হয়। আবার এই পূজারই নবমী তিথিতে পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্রের জন্মোৎসব উপলক্ষে রামনবমী পালিত হয়। অনেকে রামনবমী ব্রতানুষ্ঠান করেন এবং ঐদিনেই অবাঙ্গালী ব্যবসায়ীদের ‘নতুনখাতা’ উৎসব হয়।