অনলাইন ডেস্ক, ১ ফেব্রুয়ারী।। বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় এক ধাক্কায় অনেকটা নেমে গেলেন ভারতীয় ধনবকুবের গৌতম আদানি। কয়েকদিনের ব্যবধানেই একেবারে প্রথম দশের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছেন ভারতীয় ধনকুবের। এক সপ্তাহ আগেও ধনীতমদের তালিকায় আদানি ছিলেন ‘থার্ড বয়’। ক্রমে প্রথম স্থান দখলের দৌড়ে এগোচ্ছিলেন শিল্পপতি।
কিন্তু সেই তৃতীয় স্থান এখন অতীত। আদানি ধনীতম ব্যক্তিদের তালিকায় এখন রয়েছেন ১১ নম্বর স্থানে। আদানি গ্রুপের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির’ অভিযোগ ওঠার পর টালমাটাল পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন এর শীর্ষ নির্বাহী গৌতম আদানি।
এশিয়ার শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির কোম্পানিকে নিয়ে নিউইয়র্ক-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে গত কয়েক দিনে এই কোম্পানির সম্পদ কমেছে ৭ হাজার ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি। আদানির কোম্পানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। গত বুধবার হিন্ডেনবার্গ ওই রিপোর্ট প্রকাশ করে আদানিদের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, কৃত্রিম ভাবে আদানি গোষ্ঠী শেয়ার বাজারে নিজেদের দর বাড়িয়েছে। কারচুপির মাধ্যমে ধনী হয়েছে তারা। আদানিদের বিরুদ্ধে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। হু হু করে কমে গিয়েছে শেয়ারের দাম।মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুতগতিতে সম্পদ হারিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে পড়েছেন গৌতম আদানি।
এমনকি এই গতিতে সম্পদের অবনমন ঘটতে থাকলে শিগগিরই এশিয়ার শীর্ষ ধনীর তকমাও হারাতে পারেন তিনি। ব্লুমবার্গের বিলিয়নেয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ভারতীয় এই ধনকুবের মঙ্গলবার বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় ১১ নম্বরে নেমে গেছেন। হারাতে হারাতে আদানির বর্তমান সম্পদের পরিমাণ কমে ৮ হাজার ৪৪০ কোটি ডলারে ঠেকেছে।
আর এর মধ্য দিয়ে ভারতের আরেক ধনকুবের ও আদানির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানির চেয়ে মাত্র এক ধাপ ওপরে আছেন গৌতম আদানি। মুকেশ আম্বানির বর্তমান মোট সম্পদের পরিমাণ ৮ হাজার ২২০ কোটি ডলার।হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদনে মরিশাস এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মতো বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে বিভিন্ন কোম্পানিতে আদানি গ্রুপের মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ’ রয়েছে; যা পুরো গ্রুপটির আর্থিক ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলেছে। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়, ভারতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মূল্য নিজেদের পক্ষে নির্ধারণ করার জন্য এসব অফশোর কোম্পানিকে ব্যবহার করা হয়েছে।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে প্রকাশিত যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন আদানিরা। তারা ওই রিপোর্টকে ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। জবাবে ৪১৩ পৃষ্ঠার একটি বিবৃতি দিয়েছে এই ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী।তবে শেয়ার বাজারে আদানিদের অবস্থার উন্নতি হয়নি ৪১৩ পৃষ্ঠার ওই জবাবের পরেও। গত কয়েক দিন ধরে টানা ক্ষতির মুখে পড়েছেন গৌতম আদানি।