অনলাইন ডেস্ক, ১০ ডিসেম্বর।। খেলার সময় তখন গড়িয়েছে ৭১ মিনিটে। পেনালটি থেকে গোল করলেন মেসি। বরাবরের মতো ছুটে গেলে কর্নারে, সতীর্থরাও এসে ঝাপিয়ে পড়লেন তার ওপর। তারপর তো বুকে ক্রুশ এঁকে দুই হাত স্রষ্টার উদ্দেশ্যে আকাশেই তোলার কথা।
কিন্তু চেনা সেই দৃশ্যে এবার আনলেন অচেনা এক উদযাপন। ডাচদের বেঞ্চের সামনে এগিয়ে হাত দুটো কানের পেছনে নিয়ে করতালু ছড়িয়ে দিয়ে ‘অন্যরকম’ এক ভঙ্গি করলেন। যা দেখে ৯৮-এর ফ্রান্স বিশ্বকাপের দর্শকদের কেঁপে ওঠারই কথা। এই গোল উদযাপন দিয়ে যে রিকেলমেকে কাতারে ফিরিয়ে আনলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
গোলের পর এমন উদযাপন করতে দেখা যেত আর্জেন্টিনার হুয়ান রোমান রিকেলমেকে। গোল করা তার খুব বেশি কাজ ছিল না। মিড ফিল্ড সামলানোই ছিল তার প্রধান দায়িত্ব। তারপরও ডেড বলে অসাধারণ সব গোল ছিল তার। গোল করলেই কানের পেছনে হাত নিয়ে এই সেলিব্রেশনটা করতেন।
তবে মেসির এমন উদযাপন অনেক গণমাধ্যম শিশুদের কার্টুনের নামে ‘টোপো গিগিও সেলিব্রেশন’ প্রচার করে চলেছে। পুরোনো এই কার্টুন চরিত্রের আবার খুব ভক্ত ছিলেন রিকেলমে। কিন্তু মেসি তো আর এই কার্টুন চরিত্রের ভক্ত নন। হুট করে নিজের চেনা বৃত্ত ভেঙে রিকেলমের মতো করে তিনি কেন উদযাপন করতে গেলেন।
তাও আবার লুই ফান গালের সামনে কেন? এর পেছনের গল্পটা জানতে হলে যে ফিরে যেতে হবে ২০০২ সালে। বোকা জুনিয়র্স ক্লাবে রিকেলমে তখন প্রায় কিংবদন্তী হতে বসেছেন। ৭ বছরে ৬টি মেজর জিতেছেন। এমন সাফল্যের পর রিকেলমেকে কিনে আনল বার্সেলোনা। সেটাকে বলা হয় বার্সেলোনার ‘অন্ধকার যুগ’।
কারণ বার্সেলোনার দায়িত্বে তখন এই লুই ফান গাল। আর তার ডেপুটি হিসেবে আসল কর্মকাণ্ড সামলাতেন হোসে মরিনহো। সারা জীবন ক্রুইফের পথে ছন্দের ফুটবল খেলা বার্সেলোনাকে তখন পাওয়ার ফুটবল এবং বাস পার্কিং খেলাচ্ছেন ফন গাল-মরিনহো জুটি। তাই এরা কোনোভাবেই রিকেলমের মত চরম ধীরগতির ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডারকে মেনে নিতে পারলেন না।