অনলাইন ডেস্ক, ৩১ অক্টোবর।। তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে হারিয়ে নিজের অসাধারণ রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন লুলা। বলসোনার এই ফলাফল মেনে নেবেন কিনা এখন সেইদিকে সকলের নজর। সোমবার (৩১ অক্টোবর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, শেষ ধাপের ভোট গণনা শেষে লুলা দা সিলভা পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট আর ৪৯ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলসোনারো।বিবিসির খবরে বলা হয়, বলসোনারো ভোট গণনার প্রথম রাউন্ডে এগিয়ে ছিলেন।
কিন্তু লুলা শেষ রাউন্ডে বলসোনারোকে ছাপিয়ে যান। ৯০ শতাংশের বেশি ভোট গণনা পর্যন্ত ব্যবধান ধরে রাখেন লুলা। ইতিমধ্যে বলসোনারোর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা কমে আসতে দেখা গেছে। এরপর ধীরে আরও ব্যবধান বাড়িয়ে নেন লুলা।ইতিমধ্যে লুলার সমর্থকেরা সাও পাওলো শহরের কেন্দ্রস্থলে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে আনন্দ উল্লাস শুরু করে দিয়েছে। রিও ডি জেনিরোর ইপানেমা আশেপাশের রাস্তায় লোকজনকে আনন্দ মিছিল করতে দেখা গেছে।
নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরপরই লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নতুন করে ঠিক করবেন।নির্বাচনে ফল ঘোষণার পরপরই এক বিবৃতিতে লুলাকে অভিনন্দন জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
সাবেক ধাতুকর্মী লুলার জন্য এটি একটি অত্যাশ্চর্য প্রত্যাবর্তন। তিনি ২০১০ সালে ব্রাজিলের ইতিহাসের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব ছেড়েছিলেন। ওই সময় তাকে একটি বিতর্কিত দুর্নীতির অভিযোগে ১৮ মাস জেলবন্দী করা হয়। সেই সময় তার ইমেজ খারাপ হলেও এই অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি এবং তিনি ৭৭ বছর বয়সে আবার ফিরে এসেছেন তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য।বলসোনারো ভিট্রিওলিক কট্টরপন্থী রক্ষণশীল।
তিনি ‘ট্রপিক্যাল ট্রাম্প’ নামেও পরিচিত। অন্যদিকে ব্রাজিল তার ১৯৬৪-১৯৮৫ সালের সামরিক একনায়কত্বের শেষে দেশে গণতন্ত্রে ফিরে আসার পর থেকে বলসোনারো প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি দ্বিতীয়বার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাননি।
প্রেসিডেন্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার আগে পরাজিত প্রার্থীর প্রথম বক্তব্য এবং নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করা ব্রাজিলের ঐতিহ্য। এদিকে সাও পাওলোতে দেওয়া বিজয়ী ভাষণে লুলা বলেন, আমি এখানে আমার সঙ্গে থাকা সমস্ত কমরেডদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। যারা ভোট দিতে গিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকে আমি ধন্যবাদ জানায়। এসময় তিনি বর্ণবাদ, কুসংস্কার এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে নিরলস লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।