স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ২৩ অক্টোবর।।
বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টির ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আজ সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া, তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, আগরতলা পুরনিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, প্রধান সচিব পুণিত আগরওয়াল, বিভিন্ন দপ্তরের সচিব ও পদস্থ আধিকারিকগণ, বিএসএফ, সিআরপিএফ, আসাম রাইফেলস, এনডিআরএফ বাহিনীর প্রতিনিধি, ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের রাজ্য অধিকর্তা এন কুলকার্নি প্রমুখ।
সভায় মুখ্যমন্ত্রী বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতির মোকাবিলায় গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এক্ষেত্রে সমস্ত দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় রেখে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী মজুত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আবহাওয়ার পূর্বভাসে যা বলা হয়েছে তাতে রাজ্যে আগামী ২৪ ঘন্টায় ২০০ মিলিমিটার ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলাতেও প্রয়োজনীয় সবরকমের ব্যবস্থা নিতে হবে। তাছাড়াও ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মাতাবাড়ির ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দিরে দীপাবলি উৎসব ও মেলা উপলক্ষে সমস্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। জাতীয় সড়কে ধূস নামলে তা দ্রুত সরিয়ে ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ড্রজার রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনসাধারণকে সতর্ক ও সচেতন করতে প্রয়োজনীয় সবধরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। আতঙ্ক সৃষ্টি নয় জনসাধারণকে সচেতন করতেই এই উদ্যোগ নিতে হবে।
সভায় উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা ও জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী রামপদ জমাতিয়া মাতাবাড়িতে দীপাবলি উৎসব ও মেলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার উপর গুরুত্বা আরোপ করেন। সভায় মুখ্যসচিব জে কে সিনহা জানান, বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টির ফলে পূর্ব ভারত ও ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত এনডিআরএফ বাহিনী চাওয়া হয়েছে।
মুখ্যসচিব জে কে সিনহা আজই মাতাবাড়িতে ত্রিপুরাসুন্দরী মন্দির পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয়। পরামর্শ দিয়েছেন। সভায় রাজস্ব দপ্তরের প্রধান সচিব জানান, আজ বিকেলেই রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসকদের সাথে উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভিডিও কনফারেন্সে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাগুলিতে রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় গুয়াহাটি থেকে এনডিআরএফ’র অতিরিক্ত বাহিনী রাজ্যে আসছে। রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন জানান, ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড় মোকাবিলায় রাজ্যের সর্বত্র আরক্ষা বাহিনীকে সতর্ক রাখা হয়েছে। আরক্ষা দপ্তরের সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
সভায় ইন্ডিয়া মেট্রোলজিক্যাল দপ্তরের অধিকর্তা এন কুলকার্নি জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ২৪ ও ২৫ অক্টোবর রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামীকাল দুপুরের দিকে রাজ্যে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়াও আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ঝড়ের সম্ভাবনাও রয়েছে। ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।