অনলাইন ডেস্ক, ২৮ আগস্ট।। বাইরের উত্তাপ মাঠেও ছড়ালো। ম্যাচে টানটান উত্তেজনা ছড়ালো। একবার পাকিস্তান সমর্থকরা উল্লাসে ফাটেন, পরেরবার ভারতীয় সমর্থকরা। ম্যাচ কখনও ভারতের দিকে আবার কখনও পাকিস্তানের দিকে। হঠাৎ আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা, তো পরক্ষণেই আবার রক্ষণাত্মক।
বৈচিত্রভরা এ ম্যাচে রানও তাই উঠছিল বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। তবে শ্বাসরুদ্ধকর এই ম্যাচে শেষ হাসিটা হাসলো ভারত। পাকিস্তানি ব্যাটারদের যেমন শাসন করেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। নাসিম শাহরাও তেমনি চড়াও হন লোকেশ রাহুলদের ওপর। ভারত পাকিস্তান মহারণের ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় পেসার নাসিমের। অভিষেক ম্যাচের প্রথম ওভারেই রাহুলকে বোল্ড করে ভারতকে চাপে ফেলেন নাসিম।
তবে সেই চাপ সামলে ওঠেন বিরাট কোহলি ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সেখানে মূল ভূমিকা পালন করেন সাবেক অধিনায়ক কোহলি। কিছু শটে পাওয়া গেছে পুরোনো কোহলির ছোঁয়া। তবে সেট হয়ে রোহিত আর টিকে থাকতে পারেননি। পাক স্পিনার মোহাম্মদ নেওয়াজের বলটা নিজের আর্কের মধ্যে পেয়েছিলেন, সেটিকেই টেনে লং অনের ওপর দিয়ে ছয় মেরেছিলেন রোহিত শর্মা।
পরের বলে চেষ্টা করলেন অফ সাইডে যেতে, ফের তুলে মারলেন। তবে এবার টাইমিং হয়নি, লং অফের সীমানার ওপর ভুল করেননি ইফতিখার। ১৮ বলে ১২ রান করে ফিরলেন রোহিত, কোহলির সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠেছে ৪৬ বলে ৪৯ রান। পরের ওভারে এসে নেওয়াজ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা কোহলিকে থামান। ম্যাচ যেন তিনি পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইলেন!
জায়গা বানিয়ে তুলে মারতে গিয়ে ধরা নেওয়াজের শিকার হন কোহলি। লং অফে সেই ইফতিখার আহমেদের হাতেই ধরা পড়ে ক্যাচ। আগের শেষ বলে রোহিত ও নতুন ওভারের প্রথম বলে কোহলির উইকেট নিয়ে নেওয়াজ দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সামনে। তবে সূর্যকুমার যাদব অবশ্য তেমন কিছু হতে দেননি। রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে সূর্যকুমার জাদভের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সমর্থকরা।
তবে দুজনেই যেন ধুঁকতে থাকেন। এক পর্যায়ে অভিষিক্ত নাসিম শাহর বলে বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান সূর্যও। জ্বলে উঠতে পারেননি সূর্যের মতো করে। ফিরে যাওয়ার আগে ১৮ বলে ১৮ রান করেন। সূর্য ফিরে গেলেও অন্যপ্রান্তে টিকে ছিলেন জাদেজা। হার্দিক পান্ডিয়াকে সঙ্গে করে ধীরেধীরে এগোতে থাকেন।
দুজনে মিলে গড়ে তুলেন অর্ধশত রানের জুটি। তবুও হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছিল ভারতের আকাশে। তবে নাসিম শাহর শেষ ওভারের ৫ম বলে ছক্কা মেরে ব্যবধান কমিয়ে আনেন জাদেজা। পরের ওভারের হারিস রউফের ওভারে ১৩ রান আসলে শেষ ৬ বলে ভারতের প্রয়োজন হয় ৭ রানের।
কিন্তু প্রথম বলেই মোহাম্মদ নাওয়াজ বোল্ড আউট করেন রবীন্দ্র জাদেজাকে। ফের ভারতের আকাশে শঙ্কার মেঘ। দীনেশ কার্তিক সিঙ্গেল নিয়ে পান্ডিয়াকে স্ট্রাইক দেন। কিন্তু তৃতীয় বল ডট হলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৩ বলে ৬। চতুর্থ বলে আর তাই অন্য কিছু ভাবেননি পান্ডিয়া।
লং অন দিয়ে ছক্কা মেরে ভারতকে ম্যাচ জেতান ৫ উইকেটে। যেভাবে বোলিং ইনিংসে পাক ব্যাটারদের কাবু করেছিলেন। একইভাবে ব্যাট হাতেও শেষ ওভারে পাকিস্তানকে নিরাশ করলেন। ব্যাটে বলে সমান নৈপুন্য দেখিয়ে হার্দিক পান্ডিয়াই হয়েছেন ম্যাচ সেরা।