।। গৌতম দাস ।। স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পুর্তি উপলক্ষে হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি জিরানীয়ার উত্তর মজলিশপুরের এক অখ্যাত গ্রাম ব্রজনগরকে এনে দিয়েছে সর্বভারতীয় পরিচিতি। দেশের লক্ষ লক্ষ গ্রামের মধ্যে এই ব্রাজনগর হয়ে উঠেছে এখন তিরঙ্গা গ্রাম।
এই গ্রামের বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে এখন শোভা পাচ্ছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি ও তিরঙ্গা জাতীয় পতাকা। কোনও বাড়ির দেওয়ালে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, কোনও বাড়িতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, কোনও বাড়িতে ঋষি অরবিন্দ আবার কোনও বাড়িতে বীর সাভারকারের ছবি।
হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতে সংস্কার ভারতীর শিল্পীগণ এই অভিনব উদ্যোগ নিয়ে গ্রামের বাড়িগুলিকে সাজিয়ে তুলেছেন।
আগরতলা থেকে আসাম-আগরতলা জাতীয় সড়ক ধরে পুরাতন আগরতলা পেরিয়ে রাণীরবাজার। রাণীরবাজারে জাতীয় সড়ক থেকে বাঁদিকে মোড় নিলেই কৃষ্ণটালি। এই কৃষ্ণটালির পথ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই ব্রজনার গ্রাম।
উত্তর মজলিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শাস্ত্র, শীতল ও নির্মল পরিবেশ বান্ধব এই ব্রজনগর গ্রাম। শহরের গাড়ি ঘোড়ার আওয়াজ থেকে সম্পূর্ণ অন্য এক পরিবেশ। গ্রামের সবুজ নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। গ্রামে রয়েছে এখনও মাটির দেওয়াল ও মাটির তৈরি ঘর। তবে আধুনিকতার ছোঁয়াও লেগেছে। মাটির ঘরের পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে দালান বাড়িও।
তিরঙ্গা গ্রাম ব্রজনগরের কথা এখন মানুষের মুখে মুখে। সর্বভারতীয় প্রচার মাধ্যমেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ব্রজনগর। আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উপলক্ষে এই গ্রামটিকে সাজানো হয়েছে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি থেকে শুরু করে তিরঙ্গা জাতীয় পতাকা দিয়ে। প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে আঁকা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি।
গ্রাম বাংলায় আগে থেকেই এই সংস্কৃতি ছিল যে, গৃহিনীগণ মাটির দেওয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে তাদের নিজের বাড়িঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তুলতেন। এবার বাড়িগুলির দেওয়াল সাজিয়ে তোলা হয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি দিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতেই ব্রজনগর গ্রামের প্রতিটি বাড়ির দেওয়ালে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি আঁকা হয়েছে।
৭৬তম স্বাধীনতা দিবসের দিন গত ১৫ আগস্ট বৈচিত্র্যময় এই গ্রামটি পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা। তিনি এই গ্রামের মানুষের ভাবনায় নতুনত্ব দেখে খুবই খুশি এবং যারা এই শিল্পকর্ম বাস্তবায়ন করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।
গ্রাম পরিদর্শনের সময় মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন এই এলাকারই বিধায়ক তথা তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। সবাই এক বাক্যে গ্রামের মানুষের এই নতুন ভাবনা ও উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।