অনলাইন ডেস্ক, ১৯ আগস্ট।। মুদ্রাস্ফীতি ৮০ শতাংশের বেশি, লিরার দাম সমানে কমছে, তাও সুদের হার কমালো তুরস্ক। তুরস্কের সেন্ট্রাল ব্যাংক বৃহস্পতিবার সুদের হার ১৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৩ শতাংশ করেছে।
সেন্ট্রাল ব্যাংকের যুক্তি, ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি কমেছে বলে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মার্কিন ডলারের তুলনায় তুরস্কের লিরার দাম সমানে কমছে। গত ১২ মাসে দাম কমে অর্ধেক হয়েছে। গত পাঁচ বছরের হিসাব ধরলে লিরার দাম ডলারের তুলনায় ছয়গুণ কমেছে।
তবে তুরস্কের মানুষ অনেক বেশি চিন্তিত মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে। এখন মুদ্রাস্ফীতির হার হলো ৮০ শতাংশ। এই বছরের শেষে তা আরো বাড়তে পারে। প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের নির্দেশে তুরস্ক এইভাবে সুদের হার কমাচ্ছে। এরদোয়ান বিশ্বাস করেন, সুদের হার কমালে মুদ্রাস্ফীতি কমে।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিবিদদের ধারণা একেবারেই উল্টো। তারা মনে করেন, এরকম পরিস্থিতিতে সুদের হার কমালে তা মুদ্রাস্ফীতি আরো বাড়িয়ে দেবে। কিন্তু এরদোয়ান নিজের অভিমত থেকে সরে আসতে রাজি নন। তিনি সেন্ট্রাল ব্যাংককে তার নীতি অনুসরণ করার জন্য জোরাজুরি করেন। ২০১৯-এর পর থেকে সেন্ট্রাল ব্যাংকের তিনজন প্রধানকে তিনি বদল করেছেন।
আগামী বছর জুনে নির্বাচন। এরদোয়ান এর আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, দ্রুত আর্থিক উন্নয়ন করবেন। গত বছর সেন্ট্রাল ব্যাংক একাধিকবার বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সুদের হার কমিয়েছে। তার প্রভাব মুদ্রাস্ফীতি ও লিরার দামে পড়েছে। ওদিকে, নরওয়ে সুদের হার বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার নরওয়ের সেন্ট্রাল ব্যাংক বেস রেট শূন্য দশমিক পাঁচ থেকে বাড়িয়ে এক দশমিক সাতপাঁচ করেছে। গত বুধবার নিউজিল্যান্ডও সুদের হার বাড়িয়েছে। ২০০৮-এর পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল খুবই কম। বছরের পর বছর তারা এই অবস্থা ধরে রাখতে পেরেছিল।
কিন্তু করোনা মহামারী ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি পুরো বদলে দিয়েছে। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে চলেছে। এরপর আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেনের সেন্ট্রাল ব্যাংক ও ভারতের রিজার্ভ ব্যাংকও সুদের হার বাড়িয়েছে।