স্টাফ রিপোর্টার, আগরতলা, ১৫ আগস্ট।। রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইন আর্য ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস পালনের অঙ্গ হিসেবে আজ সকালে সার্কিট হাউস সংলগ্ন মূর্তি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর তিনি মহাত্মা গান্ধীর মূর্তিতে মাল্যদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর তিনি গান্ধীঘাটস্থিত গান্ধীবেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইন আর্য লিচুবাগানস্থিত এলবার্ট এক্কা পার্কে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে ভারতের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের তিনটি অনুষ্ঠানেই রাজ্যপালের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, রাজ্যপালের সচিব টি কে চাকমা, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক দেবপ্রিয় বর্ধন এবং রাজ্য সৈনিক কল্যাণ বোর্ডের অধিকর্তা ব্রিগেডিয়ার জে পি তেওয়ারি (অবসরপ্রাপ্ত)।মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় ভারতের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। সকালে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা পুলিশের জওয়ানগণ জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এরপর ত্রিপুরা পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর বলরাম দেববর্মার নেতৃত্বে ত্রিপুরা পুলিশের জওয়ানগণ মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সাংবাদিকদের জানান, যাদের আত্মবলিদানে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে আজ তাঁদের স্মরণ করার দিন।
আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে সারা দেশের সাথে রাজ্যেও হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ নিজ বাড়িতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী তারজন্য সমস্ত রাজ্যবাসীকে আন্তরিক। অভিনন্দন জানিয়েছেন। আজ সকালে সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ।
আরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের সমবেত কুচজাওয়াজে তিনি অভিবাদন গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে বর্তমান প্রজন্মকে দেশপ্রেমের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যেই হর ঘর তিরঙ্গা কর্মসূচি রাজ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে।
স্বদেশ ভাবনায় যুব শক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতেই বর্ষব্যাপী আজাদি কা অমৃত মহোৎসব দেশজুড়ে পালিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সচিব টি কে চাকমা সহ বিভিন্ন আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সচিবালয় প্রশাসনের কর্মীরা অংশ নেন।
দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী আজ বিধানসভা প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর তিনি বক্তব্য রাখার শুরুতেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ তার ভাষণে বলেন, বহু মানুষের আত্মবলিদানের মাধ্যমে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
স্বাধীনতার এই পুণ্যলগ্নে আজ তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করার দিন। অধ্যক্ষ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ২০৪৭ সালের মধ্যে এক উন্নত ভারত গড়ে উঠবে। ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সন্ধ্যায় রাজভবনে অনুষ্ঠিত হয় অ্যাট হোম অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সত্যদেও নারাইন আর্য, রাজ্যপাল পত্নী সরস্বতী দেবী, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বিধানসভার অধ্যক্ষ রতন চক্রবর্তী, বিধানসভার সরকারি মুখ্য সচেতক বিধায়ক কল্যাণী রায় প্রমুখ।
তাছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম লোধ, বিচারপতি এস চট্টোপাধ্যায়, মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশে মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন এবং রাজ্য ও আরক্ষা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। আজাদি কা অমৃত মহোৎসব ও ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের ২ নং প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শচীন দেববর্মণ সংগীত মহাবিদ্যালয়, উমাকান্ত একাডেমি, ট্রাইবেল রিসার্চ অ্যান্ড কালচারেল ইনস্টিটিউট এবং বিভিন্ন শিল্পীদের দ্বারা সমবেত সংগীত, সমবেত নৃত্য ও যোগা পরিবেশিত হয়।
তাছাড়াও ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আগরতলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী কর্তৃক প্রভাতফেরি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৭টায় সরকারি প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।